৬০ লাখ টাকাসহ ৬ দিন ধরে লাপাত্তা বিকাশের জোনাল (বাগেরহাট দক্ষিণ) এজেন্টের ব্যবস্থাপক শাহিন! মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার বা কোন হদিস মিলাতে পারে নি প্রশাসন!
এদিকে শাহিন নিখোঁজ হওয়ার আগে তার ছোটভাই র্যাব সদস্য শামিমের সাথে শেষবার তার কথা হয় এমন তথ্য পেয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মঙ্গলবার সরেজমিনে মংলা শহরের বিএলএস রোডে অবস্থিত বিকাশের জোনাল এজেন্ট লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল কার্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, এখানে শুরু থেকেই শাহিন কাজ করছেন ব্যবস্থাপক হিসেবে।
লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক হারুন অর রশিদ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ঘটনার দিন ব্যাংক থেকে ৩০লাখ টাকা উঠানোর কথা থাকলেও হঠাৎ সে আমাকে প্রয়োজনে ৬০টাকা উত্তেলনের কথা বলে । পরে আমি রাজিও হই।
হারুন অর রশিদ আরো বলেন, আমি তার সাথে টাকা তুলতে যেতে চাইলেও সে আমাকে প্রচন্ড গরমের দোহাই দিয়ে টাকা তুলতে বাগেরহাট না যেতে অনুরোধ করে।
তিনি জানান, “নিখোঁজ হওয়ার পর সিসিটিভিতে ধরা পড়া ফুটেজে শাহিনকে খুব অস্বাভিক দেখাচ্ছিলো। এছাড়া শাহিনের নিজ সিম দিয়ে শেষবার তার ছোটভাই র্যাব সদস্য শামিমের সাথে কথ বলেছেন কল লিষ্ট ট্রাকিং এর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এমন তথ্য পেয়েছে” বলে জানান হারুন।
অপরদিকে, এলাকাবাসীর অভিযোগ শাহিন নিখোঁজ হলেও তাকে খোঁজার কোনো উদ্যোগ নেই পরিবারের পক্ষ থেকে।
তবে, তার ছোট ভাই ব্যবসায়ী মো. সেলিম হাওলাদার এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, ঘটনার পর আমরা মংলা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু ঘটনাটি তাদের আওতার মধ্যে না, এমন দোহাই দিয়ে অভিযোগটি আমলে নেয় নি পুলিশ। তার ভাইকে ওই টাকাসহ দুর্বৃত্তরা অপহরণ করেছে বলে দাবি তার।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা-টাকা আত্মসাত করে গা ঢাকা দিয়েছেন শাহিন।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আজম খান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, শাহিনের বিষয়টিতে অনেকদূর অগ্রগতি হয়েছে। শাহিন নিখোঁজ হওয়ার আগে সে যে রুটে কাজ করত (মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলায়) সেখানে কয়েক জনকে বলেছেন তিনি বেশিদিন এ লাইনে থাকবেন না।
বাচ্চাদের ভবিষ্যতে কথা চিন্তা করে খুব শিগগিরই এ কাজ (লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের চাকরি) ছেড়ে দেবেন। তাছাড়া এত বড় অংকের নগদ টাকা নিয়ে তিনি একা পালাতে পারেন না।
শাহিন পূর্ব পরিকল্পনা করে এ কাজটি করেছে। আর তাতে সহায়তা করেছে কয়েক জন। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই এর বেশি কিছু জানতে রাজি হন নি তিনি।
ওসি আরো বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। খুব শিগগিরই এ নাটকের অবসান ঘটবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে বাগেরহাট শহরের রাহাতের মোড়ে ব্র্যাক ব্যাংক বাগেরহাট শাখা থেকে ৬০ লাখ তোলার পর টাকাসহ শাহিন নিখোঁজ হন। পরদিন শুক্রবার লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ এ ব্যাপারে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় শাহিনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। শাহীন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুঁটিখালী ইউনিয়নের ভাটখালী গ্রামের সুলতান হাওলাদারের ছেলে।