বিকাশের জোনাল (বাগেরহাট দক্ষিন) এজেন্টের ব্যাবস্থাপক মোঃ শাহিন হাওলাদার নিখোঁজ হবার ঘটনাটি ‘অপহরণ নাকি আত্মগোন’ তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের রাহাতের মোড়স্থ ব্রাক ব্যাংক বাগেরহাট শাখা থেকে ওই টাকা উত্তলনের পর নিখোঁজ হন শাহিন।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে বিকাশের এজেন্ট মেসার্স লক্ষ্মী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ এব্যাপারে বাগেরহাট সদর মড়েল থানায় তার ওই ব্যাবস্থাপক এবং আরো কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
তবে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত ৬০ লক্ষ টাকাসহ নিখোঁজ ওই ব্যক্তি অপহৃত হয়েছেন নাকি বিকাশের ওই টাকা নিয়ে নিজে গা ঢাকা দিয়েছেন না পুরো পুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা আত্মসাত করতে নিজে গা ঢাকা দিয়েছেন শাহিন।
তবে শাহীনের ভাই সেলিম হাওলাদার দাবী তার ভাইকে ওই টাকাসহ দুর্বৃত্তরা অপহরণ করেছে।
মোঃ শাহীন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুঁটিখালী ইউনিয়নের ভাটখালী গ্রামের মো. সুলতান হাওলাদারের ছেলে।
মংলাস্থ মেসার্স লক্ষ্মী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ বাগেরহাট ইনফো ডটকামকে জানান, বিকাশের লেনদেনের জন্য ব্রাক ব্যাংকর বাগেরহাট শাখা থেকে ৬০ লাখ টাকা তুলে আনতে মংলা থেকে তার ম্যানেজার মো. শাহীনকে পাঠানো হয়। টাকা উত্তোলনের পর দুপুর দেড়টা থেকে তাঁকে আর পাওয়া যাচ্ছেনা। তার মোবাইল ফোনই বন্ধ রয়েছে।
পরে ঘটনাটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে জানানো হয়। শাহীন ১০ বছর ধরে তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, এ ঘটনা জানাজানি হলে বৃস্পতিবার বিকালে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হায়াতুল ইসলাম খান, সদর মড়েল থানার ওসি আলী আজমসহ প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ব্রাক ব্যাংক বাগেরহাট শাখার সিনিয়র অফিসার মো. নাসির উদ্দিন বাগেরহাট ইনফোকে জানান, বৃহষ্পতিবার দুপুর ১টার সময়ে মংলা উপজেলার মেসার্স লক্ষ্মী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদের দেয়া ৬০ লক্ষ টাকার চেক নিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো. শাহীন ব্যাংকে আসেন।
ওই চেক পেয়ে আমি তাঁকে টাকা দেব কিনা জানতে চেয়ে মোবাইলে বিকাশ এজেন্ট হারুন অর রশিদকে ফোন দেই। তিনি টাকা দেয়ার অনুমতি দিলে ১টা ৬ মিনিটে থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত ব্যাংকের ক্যাশিয়ারের কাছ থেকে ৬০ লাখ বুঝে নিয়ে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান মো. শাহীন।
তিনি আরো জানান, টাকা উত্তোলন করে চলে যাওয়ার পর দুপুর আড়াইটার দিকে মেসার্স লক্ষ্মী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানকে মোবাইল ফোনে পাচ্ছেনা বলে অবহিত করেন। তখন থেকে শাহীনকে খোঁজাখুঁজি করা শুরু হয়।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বাগেরহাট ইনফো ডটকামকে জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে প্রতিষ্ঠানটির সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ মংলা থেকে বাগেরহাটে পৌছার পর পুলিশের উপস্থিতিতে ব্যাংকের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারন করা ছবি যাচাই বাছাই করা হয়েছে।
এব্যাপারে বাগেরহাট সদর মড়েল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আজম শুক্রবার বিকালে বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, এঘটনায় নিখোঁজ মো. শাহিন সহ আরো কয়েক জনের বিরুদ্ধে দুপুরে মড়েল থানায় মামলা হয়েছে।
শাহীন টাকা আত্মসাত করতে নিজেই গা ঢাকা দিয়েছেন বলে প্রথমিক অনুসন্ধানে তথ্য প্রমান পাওয়া গেছে বলে জানান মি. আজম।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হায়াতুল ইসলাম খান বাগেরহাট ইনফো ডটকামকে জানান, ব্যাংক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি যাচাই বাছাই করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে মেসার্স লক্ষ্মী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদের ব্যবস্থাপক মো. শাহীন ব্যাঙ্কে এসে চেক জমা দেয়ার পর থেকে খুব অস্থির ছিলেন। শাহীন মোবাইল ফোনে কথা বলছেন বাইরে হাটাহাটি করছেন।
সবদিক বিবেচনার পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে। টাকাসহ নিখোঁজ শাহিনকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।