সবাইকে আমার শীতের কুয়াশাভেজা শুভেচ্ছা। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালই।
অনেক দিন ধরে বাগেরহাট ইনফোতে প্রযুক্তি নিয়ে লেখা দেওয়ার জন্য আমাকে বলা হচ্ছিল। কিন্তু সময়ে পেরে উঠছিলাম না। শেষ পর্যন্ত কিছু সময় বের করতে পারলাম ইনফো তে Tech বিষয়ক লেখা দেওয়ার জন্য।
আজ আমি আপনাদের মাঝে ফেইসবুকে ফেক ইউজার সনাক্ত করতে নতুন একটি অ্যাপ্লিকেশন “fake off“ নিয়ে আলোচনা করব।
সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলির মাধ্যমে সাইবারক্রাইম ঠেকাতে ফেসবুকে জাল অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করতে সাহায্য করে এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরী করেছে ইজরায়েল ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। যার নাম FakeOff. এটি অনায়সেই শনাক্ত করতে পারে ফেসবুকের ফেইক (জাল) একাউন্টগুলি।
বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মে এটি সেই সকল ফেসবুক ব্যবহারকারীদেরকে নিরাপত্তা প্রদান করে, যারা facebookকে ফেইক আইডি (জাল ব্যবহারকারীদের) স্ক্যামের কারনে চিন্তিত। অ্যাপ্লিকেশন একই সাথে সত্যি কারের নতুন বন্ধুদের শনাক্ত করতেও কাজ করে।
সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় “সারা বিশ্বে ১.৩৫ বিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে অন্তত ১০% এ্যাকউন্টই ফেক। এছাড়া, ভূয়া পরিচয় এবং নিয়মিত ব্যবহারকারী হিসাবে facebook এর প্রদর্শিত ব্যবহারকারীদের সংখ্যা লক্ষাআধিক ছাড়িয়েছে বহু আগেই।”
Fake Off অ্যাপ্লিকেশন স্রষ্টা Eliran Shachar জানিয়েছে, এই সকল জাল (ফেক) প্রোফাইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। যার ফলে এটি হয়ে উঠছে আর্থিক এবং সামাজিক ক্ষতির কারণ। পাশাপাশি মানসিক অপরাধীদের মাধ্যমে কারো সম্মানহানি, শিশুদের উপর মানসিক ও যৌন নির্যাতন, অন্যায়ভাবে ব্ল্যাকমেইলিং করে সম্পত্তি দখল করে নেওয়াসহ অন্যের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ভঙ্গ করার কাজেই ব্যবহার হয়ে থাকে।
Shachar বলেন, “FakeOff অ্যাপ্লিকেশনটি সন্দেহভাজন বন্ধুর আচরণ তদন্ত করবে এবং একটি নির্দিষ্ট মাত্রার ১-১০ বিশ্বাসযোগ্যতা স্কোর অনুযায়ী তাদের অবস্থান নির্ণয়ে অত্যাধুনিক অ্যালগরিদম ব্যবহার করে। যার ফলে প্রত্যেক সন্দেহভাজন ফেসবুক বন্ধুর অস্বাভাবিক কার্যকলাপ চেক করার জন্য টাইমলাইনে কার্যকলাপ ৩৬৫দিন পর্যন্ত স্ক্যান করতে থাকে।”
তিনি আরও বলেন, অ্যাপ্লিকেশনটি নিয়মিত ভাবে সন্দেহভাজন ব্যক্তির টাইমলাইনের অস্বাভাবিক কার্যকলাপ সনাক্ত করে। তাছাড়া ব্যবহারকারীর অনলাইনের কোথাও কোন কিছু চুরি হলে চোরকে খুঁজে বের করতে সন্দেহ ভাজনের ফটো স্ক্যান করে দিতে পারবে এটি।
এছাড়া, অ্যাপ্লিকেশনটি সন্দেহভাজনের আইডি বিশ্লেষন করে তথ্য অনুসন্ধান এবং একই ধরনের সন্দেহভাজনদের অন্যান্য তদন্তের উপর ভিত্তি করে ব্যবহারকারীকে একটি ফলাফলের হিসাব প্রদান করে।
FakeOff সফটয়্যার এখন পর্যন্ত (২মাসে) ১৫ হাজারেরও বেশি ব্যাবহারকারী ব্যাবহার করেছে।
এবিষয়ে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত পরিচালিত তদন্তে দেখা গেছে শতকরা ৪৪ভাগ ব্যাবহারকারীর একাউন্টই ফইক (জাল)। একটি জাল প্রোফাইল অত্যন্ত জটিল হতে পারে। তবে ফেক অফ ওই ব্যবহারকারীদের খুঁজতে সাহায্য করে।
যারা অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করিনা, তারা ছবির স্ক্যান ফলাফল থেকে চূড়ান্ত ফলাফল জানতে পারিনা, কিন্তু ফেক অফ ইউজারেরা খুব সহজেই তা পারে।
প্রতিষ্ঠানটি বলেছে ফেসবুকের প্রায় ৭.৯% একাউন্ট হুবুহু নকল করে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ১.২% থেকে ২.১% পর্যন্ত একাউন্ট অনাকাঙ্খিতভাবে সাইবারক্রিমিনালদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
ফেসবুকের মতে, সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটের ওপর আনুমানিক 14.3 কোটি অ্যাকাউন্ট ভুয়া হতে পারে। যাদের মধ্যে দুটি বড় অংশ ভারত এবং তুরস্ক।
আজ এই পর্যন্ত। ।
আশা করি পোস্ট টি আপনাদের কাজে লাগবে।।