মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বন্দরের প্লট মালিক ব্যবসায়ীরা ।
ব্যবসায়ীদের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের ইজারা দেওয়া প্লটের খাজনা এবং কিছু বিতর্কিত বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ব্যাবসায়িদের এ আন্দোলন প্রস্তুতি বলে জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বণিক সমিতি ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা না বলেই বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি সভার মাধ্যমে খাজনা বৃদ্ধি করেছে। এ সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে তাদের (ব্যবসায়ীদের) জন্য আত্মঘাতী। তাই বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে আন্দোলনে ছাড়া উপায় থাকবে না।
এ ব্যাপারে মংলা বণিক সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, ১৯৫০ সালের ১১ডিসেম্বর সৃষ্টি হয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মংলা। এরপর শ্রমিক ও নাবিকদের খাদ্য যোগাড়ের জন্য মংলা বাজার গড়ে ওঠে। সেই সময়ে পোর্ট অফ ডাইরেক্টর মংলা বন্দর পরিচালন করতেন।
তিনিই (পোর্ট অফ ডাইরেক্টর) মংলা বন্দরের ব্যবসায়ীদের সমতল ভূমী বরাদ্দ দিয়েছে। তখন বরাদ্দ পাওয়া প্লট মালিকরা ব্যবসার জন্য একের পর এক ঠালা, ডোবা, পতীত ও জলাশয়পূর্ণ সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ভবন/ঘর নির্মানে ব্যবসা উপযোগী পারিবেশ সৃষ্টি করে।
বন্দরে প্লট ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফোকে জানান, ব্যবসায়ীরা প্রতি বর্গফুট জায়গার খাজনা ৬ টাকা হারে পরিশোধ করে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের ২১৭ তম সাধারণ বোর্ড সভায় ২৬৮৭ নং সিদ্ধান্তে খাজনার পরিবর্তে ভাড়া শব্দ ব্যবহার করে প্লটের ভাড়া ৬ টাকার স্থলে ১২টাকা করেছে।
এছাড়াও এ ভাড়া প্রতি দুই বছরে ১০শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে বলেও ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়। যা মংলা বন্দরের ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বড় ধরণের আঘাত হানবে বলে জানান তিনি।
প্লট মালিক ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষের এই হটকারী সিদ্ধান্ত বন্দরের কাছের ব্যবসায়ীরা (যারা বন্দরের কাছ থেকে প্লট বরাদ্দ নিয়েছে) মেনে নেবে না। এ প্রতিবাদের তাদের আন্দোলনের সকল পস্তুতি চলছে।
আন্দোলনের জন্য ইতোমধ্যে তারা ৩১ সদস্য কমিটিও গঠন করে ফেলেছে। যার আহবায়ক করা হয়েছে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহজাহান শিকারী ও সদস্য সচিব করা হয়েছে বণিক সমিতির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমানকে।
এব্যাপারে মংলা বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডর হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এক বারও বন্দরের কোন মাশুল (খাজনা) বৃদ্ধি করা হয়নি। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে তেলের মূল্য এবং অনান্য খরচ কয়েক গুন বেড়েছে। তাই সবার সাথে মতবিনিময়ের পর বন্দর কতৃপক্ষ খাজনা বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত গ্রাহন করেছে।
মূলত সার্বিক খরচ বৃদ্ধি এবং লোকসানের থেকে বন্দরকে রক্ষার জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রনালয় ও যথাযথ কতৃপক্ষের অনুমদনের মাধ্যমেই এ সিদ্ধন্ত নেওয় হয়েছে বলে জানান তিনি।