বাগেরহাটের ফকিরহাটে ৩ বারের পুরস্কার প্রাপ্ত এক গ্রাম পুলিশকে হত্যার দায়ে চার জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার দুপুরে বাগেরহাটের একটি আদালত গ্রাম পুলিশ হারুন অর রশিদকে হত্যার দায়ে এ আদেশ প্রদান করেন।
হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় রায়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির ৪ সদস্য- বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর গ্রামের আবুল শেখের ছেলে শামীম শেখ, ওসমান শেখের ছেলে আনোয়ার শেখ ওরফে ছুটে, একই উপজেলার কাকডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল আলী সরদারের ছেলে রনি সরদার ও সোনাখালী গ্রামের হারুন মোল্লার ছেলে হবি মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, জেলার ফকিরহাট উপজেলার মুলঘর গ্রামের গ্রাম পুলিশ হারুন অর রশিদ একজন দক্ষ ও সৎ গ্রামপুলিশ ছিলেন। সে বিভিন্ন সময়ে চরমপন্থি ও সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দিতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক সহযোগীতা করে আসছিলেন। হারুন অর রশিদ ভাল কাজের জন্য তিন বার পদকও পেয়েছেন।
দলের লোকদের বিভিন্ন সময় ধরিয়ে দেওয়ায় চরমপন্থিরা ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পিতভাবে দণ্ডপ্রাপ্ত ওই চরমপন্থিরা ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে বাড়ি কাছে তাকে এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করে।
হত্যাকাণ্ডের পর চরমপন্থিরা সেখানে তাদের দলের পোস্টার ও লিপলেট ছড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে দলের পক্ষে শ্লোগান দিতে থাকে।
ঘটনার পরদিন হারুন অর রশিদের ছোট ভাই মো. হিরু শেখ বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায়। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১০ জুলাই ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাবুল চন্দ্র বনিক চরমপন্থি দলের পাঁচ সদস্যকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
এদের মধ্যে মামলার বিচার কাজ চলাকালে অভিযুক্ত ইব্রাহিম শেখ মারা যান। আদালত স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ এবং দির্ঘ্য বিচারিক কার্যক্রম শেষে বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও বাগেরহাটের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী জানান, দীর্ঘ ১০ বছর পর গ্রামপুলিশ হারুন-অর রশিদ হত্যামামলার বিচার কাজ আদালত শেষ করেছে। আদালত ওই মামলায় চরমপন্থি দলের চার সদস্যকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাদন করেছে।
বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এস.এম সোলায়মান এই রায় প্রদান করেন।