শুক্রবার ভোর থেকে বন্ধ বাগেরহাট থেকে দূরপাল্লার পরিবহন যাত্রা। ফলে পিরোজপুর-বাগেরহাট-খুলনা থেকে মাওয়া হয়ে চলাচলকারী ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ রুটের দুরপাল্লার পরিবহন বন্ধ রয়েছে।
বিএনপি নেতাদের দাবী ২৯ ডিসেম্বর তাদের কর্মসূচিতে বাধা দেযার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিকল্পিত ভাবে এটা করা হয়েছে। তবে জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের বলছে, ১৮ দলের অবরোধে বাগেরহাটে বাস ভাংচুর এবং শ্রমিকদের মারধর মামলায় আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে অর্নিদিষ্টকালের জন্য এ পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিরধীদল গুলোর ডাকা টানা অবরোধ শেষ না হতেই বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনের এ ধর্মঘটে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারন যাত্রীরা।
২৯ ডিসেম্বর (রোবরার) বিরধীদলের ডাকা এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শনিবার থেকেই বন্ধ হতে পারে বাস চলাচল এমন ধারণ ছিল অনেকে। তাই যারা টানা অবরোধের পর জরুরি প্রয়োজনে বাড়িতে এসেছিলে বা ঢাকা যাবার কথা ভাবছিলেন তাদের অধিক অংশই ঢাকা যাত্রার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আজ।
কিন্তু আজ থেকেই এই বিড়ম্বনা শুরু হওয়া তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। অনেকেই সকালে বাস স্টান্ডে এসে তার পর জানতে পারেন আজ থেকে বাস ধর্মঘট। আবর অনেকে সকালে ফোনে জানান হয়েছে বাস চলবে না বলে।
ফলে অগ্রিম টিকিট নিয়েও গন্তব্যে যেতে পারেনি অনেক নিয়মি যাত্রী।
ঢাকায় একটি বেসরকারি ফার্মে চাকুরিরত খালিদ শেখ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, আমরা ভাই রাজনীতি করি না। দু’সপ্তাহ পরে জরুরি দরকারে বাড়ি আসছিলাম। সকালে স্টান্ডে এসে জানতে পারলাম বাস চলবে না। কিভাবে ঢাকা যাব যানি না।
ঢাকার একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত বায়জীদ হোসেন বাগেরহাট ইনফোকে জানান, রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে বেশ ক’দিন ধরে আটকে আছি বাগেরহাটে। একটি পরীক্ষা থাকায় আজ ঢাকা যেতে টিকিট কেটে ছিলাম। কিন্তু কাউন্টার থেকে ফোন করে তারা জানায় ‘গড়ি চলবে না। টিকটের টাকা নিয়ে যান।’
খালিদ শেখ, বায়জীদ হোসেনের মতন এমন বিড়ম্বনায় পড়েছেন অনেনেই। কেউ বা আবার এর পরও মাইক্রো, টেম্পু এসব ছোট যানে ছুটছেন গন্তব্যে।
ঢাকার একটি বহুজাতিক বায়িং হাউজ কোম্পানীর কর্মকর্তা জিএম রাশেদ। আাজ দুপুরের গাড়িতে ঢাকা যাবার কথা থাকলেও সকালে যানতে পারেন গাড়ি যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে গন্তব্যে যেতে তিনি রওনা হয়েছে কাটা পথে। সন্ধা ৬ টা ৪৮ মিনিটে মুঠফোনে তিনি বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, পথে পথে বাধা পেরিয়ে মটর সাইকেল, মাইক্রো, মাহেন্দ্র, টেম্পু, ভ্যান, লঞ্চ এবং পায়ে হেটে দীর্ঘ্য সাড়ে ৯ ঘন্টা যাত্রায় তিনি এই মাত্র পদ্মার মাওয়া ঘাট পর হলেন।
এদিকে, জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তালুকদার এ বাকি ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধে জামায়াত-শিবিরের পিকেটাররা বাগেরহাটে অন্তত ৫০টি গাড়ী ভাংচুর এবং বেশ কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করেছে বলে দাবী করে বলেন, এসব ঘটনায় বাগেরহাটের বিভিন্ন থানায় ৪-৫টি মামলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এসব মামলার কোন আসামী গ্রেপ্তার করে নি। তাই শুক্রবার ভোর থেকে শ্রমিক ইউনিয়ন অর্নিদিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাগেরহাট বাসষ্ট্যান্ড থেকে শুক্রবার ভোরে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও বরিশালের উদ্দেশ্যে কোন বাস ছেড়ে যায়নি। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার না করলে বাগেরহাটের ১৬টি অভন্তরীণ রুটে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তবে এব্যাপারে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, আওয়ামী লীগ বাস বন্ধ করে আমাদের ঢাকা যাওয়া বন্ধ করতে পারবে না। বিকল্প মাধ্যমে আমরা ঢাকা যাচ্ছি।
এবিষয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্লার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, শুক্রবার ভোর থেকে বাগেরহাট বাসষ্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোন পরিবহন ছেড়ে যায়নি। অবরোধের সময় এসব রুটের যে সকাল গাড়ী ভাংচুর হয়েছে সেইসব মামলার আসামীদের ধরার চেষ্টা চলছে।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।