বাগেরহাট শহরের পঁচা দিঘির পাড় এলাকায় শিবির-পুলিশ সংঘর্ষে ঘটনায় সদর থানার ওসি এবং চার পুলিশ কনস্টেবল আহত ও শিবিরের ৩ কর্মী গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের দেওয়ানবাটি গ্রামে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত একটি মাদ্রাসা এবং ছাত্র শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি মঞ্জুরুল হক রাহাতের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালালে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: লিয়াকত আলী, কনস্টেবল আব্দুল হামিদ (৪৭), ভিক্টর (২২) ও তানজির (২০), ওজিয়র (৩৭)। আহত চার পুলিশ কনস্টেবলকে রাত পৌনে নয়টার দিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে শিবিরের গুলিবিদ্ধ ও আহত কর্মীদের কারও নাম জানা যায়নি।
স্থানীয়রা বাগেরহাট ইনফোকে জানান, রবিবার রাতে স্থানীয় খানজাহান আলী ইয়াতিমখানা ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ আসামী আটকের অভিযান চালায়। এ সময়ে মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষনা দিলে এলাকাবাসী ছুটে এসে পুলিশকে ধাওয়া দেয়।
এসময়ে পুলিশ গুলি চালায়। একপর্যায়ে পুলিশ শক্তি বৃদ্ধি করে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াতিমখানা, শিবির নেতা মঞ্জুরুল হক রাহাত ও ব্যাংক কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন বাড়ি এবং রুস্তম হাওলাদারের টেম্পু ও জলিল মোল্লার দোকান ভাংচুর করে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোল্যা নিজামুল হক বাগেরহাট ইনফোকে জানান, মঞ্জুরুল হক রাহাতের বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা গোপণ বৈঠক করে নাশকতার পরিকল্পনা করছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ৭ টার দিকে একদল পুলিশ ঐ বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ির পার্শ্ববর্তি খান জাহান আলী ট্রাস্ট পরিচালিত খান জাহান আলী আদর্শ আলিম আলিম মাদ্রাসা ও এয়াতিমখানা থেকে ‘গ্রামে ডাকাত পড়েছে’ বলে মাইকিং করা হলে আশেপাশের বাড়ি থেকে জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
খবর পেয়ে বাগেরহাট পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
তিনি জানান, হামলাকারীদের প্রতিহত করতে পুলিশ এসময় ৪০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ৯ রাউন্ড চাইনিজ রাইফেলের এবং ৪ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ছোড়ে।
খান জাহান আলী আদর্শ আলিম মাদ্রাসার সভাপতি মুহিতুল ইসলাম দাবি করেছেন যে, মাদ্রাসার পাশের খান জাহান আলী ট্রাস্ট পরিচালিত মসজিদ থেকে মাইকিং করে জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীদের জড়ো করা হয়। পরে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়।
বাগেরহাট জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী অ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ রাতে মুঠোফোনে বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, পুলিশ কোন কারণ ছাড়াই মঞ্জুরুল হক রাহাতের বাড়িতে ঢুকে তান্ডব চালিয়ে আসবাবপত্র, ফ্রিজ, মটর সাইকেল ভাংচুর করে। এ সময় রাহাত বাড়িতে ছিলেন না।
এসময়ে পুলিশের হামলায় দলের ৩ কর্মী গুলিবিদ্ধ এবং মহিলাসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। তবে এসময় কারো নাম জানাতে পারেন নি তিনি।
অ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে পুলিশ পিছু হটে যায়। পুলিশ খানজাহান আলী আদর্শ আলিম মাদ্রাসায়ও ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।