বাগেরহাটের রামপালে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবিরের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় কম পক্ষে দু’জন জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত্য ২০ জন আহত হয়েছে।
বুধবার সন্ধা পৌনে ৬ টার দিকে উপজেলার ফয়লা বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আব্দুল মতিন ও বাকি বিল্লাহ নামের দুই আহত জামায়াত কর্মিকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয়রা বাগেরহাট ইনফোকে জানান, কাদের মোল্লার ফাঁসিকে কেন্দ্র করে ডাকা হরতাল ও অবরোধের সমর্থকরা সড়কে গাছ ফেলে অবোরধের চেষ্টা করে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে তাদের সাথে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এসময় জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়া টিয়ারসেল ছোড়ে। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা ধরে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে- উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার মুজাহিদুল ইসলাম (১৯), রণসেন এলাকার সাঈদের ছেলে হাসিবুর (২২), ইসলামাবাদের খলিল তরফদারের ছেলে জাহিদ তরফদার (১৮) চাঁদপুর এলাকার সিরাজ ইসলাম হাওলাদার (৩৮), আব্দুল আজিজ (৪০), বাকী বিল্লাহ (৩৮) নামে ছয় জামায়াত-শিবির কর্মীর নাম জানা গেছে।
জামায়াতে ইসলামীর নেতারা দাবি করেছেন, পুলিশের ছোড়া গুলিতে হাসিবুর রহমান (১৮), মুজাহিদুল (১৯) সহ তাদের আরও তিন কর্মী গুলিবিদ্ধ এবং অন্তত্য ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের রামপাল ও খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. উৎপল দেবনাথ বাগেরহাট ইনফোকে জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার ও মুজাহিদ নামে দুই ব্যক্তিকে সন্ধ্যায় রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে পিঠে গুলিবিদ্ধ মুজাহিদকে আশংকাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জেলা জামায়াতের সক্রটারি এ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা জামায়াত ইসলামীর উদ্যোগে রামপালের ফয়লা বাজার থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ফয়লা বাসস্ট্যান্ডে পৌছ খুলনা-মংলা সড়কে উঠতে চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পুলিশের ছোড়া গুলিতে এসময় তাদের তিন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে দবি করেন তিনি।
বাগেরহাট সদর সার্কেল এসপি মো. জাহিদুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফোকে জানান, জামায়াত-শিবিরকে মূল সড়কে আসতে নিশেধ করা হলেও তারা তা না মেনে মহাসড়কে এসে পুলিশের উপর হামল চালায়। পরে পুলিশও টিয়া টিয়ারসেল ছোড়ে।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী দাউদ হোসেন বাগেরহাট ইনফোকে জানান, জামায়াত ইসলামীর মিছিলটি ফয়লা বাজার থেকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌছলে মিছিলের ভেতর থেকে জামায়াত কর্মীরা সেখানে দাড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। পুলিশ আতœরক্ষার জন্য শর্টগানের ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল ছুড়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সময় পুলিশের অন্তত পাঁচ সদস্য কমবেশী আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬১ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ১৬ টি টিয়ারসেল ছোড়া হয়েছে বলেন জানান তিনি।
তবে পুলিশের গুলিতে কেউ আহত হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ধরণের কোন তথ্য নেই।’
ফের সংর্ঘষের আশকায় এঘটনার সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে রামপালসহ জেলার অনান্য উপজেলা গুলোর সাধারণের মাঝে ছড়িয়ে পরে আত্মাংক। অনেক স্থানে বন্ধ হয়ে যায় দোকান-পাট।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।