প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার এক দিনের বাগেরহাট সফর কালে গতকাল (বুধবার) বাগেরহাটসহ রামপাল ও মংলায় ‘রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হলে সুন্দরবন ও পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না’ দেওয়া বক্তব্যে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাগেরহাটে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনে আয়জন করে সুন্দরবন ভিত্তিক গবেষনা প্রতিষ্ঠান সেভ দ্যা সুন্দরবন ও তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বাগেরহাট জেলার নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বাগেরহাট জেলা তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হলে পরিবেশ ও সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এই তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাতিলের দাবী জানিয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলে- জাতীয় কমিটির জেলা শাখার আহবায়ক রনজিৎ চট্রোপাধ্যায়, সদস্য সচিব ফররূখ হাসান জুয়েল, তুষার কান্তি দাস, মানিক লাল মজুমদার, এড. ডাকুয়া মুনসুর আলী, জাহিদুল ইসলাম জাদুসহ নেতারা নেত্রীবৃন্দ।
এসময় তারা বলেন, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে ও বন্ধ হবে সুন্দরবনের পাশে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।
অন্যথায় এমন আত্মঘাতি প্রকল্প নির্মান করা হলে দূর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে তা প্রতিহত করা হবে বলে জানান তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির জেলা শাখার নেতারা উল্লেখ করেন।
অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রীর রামপালে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সেভ দ্যা সুন্দরবনের সভাপতি ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম।
বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, সরকারের ইআইএ রিপোর্টের বিশ্লেষণ অনুযায়ী কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ এর প্রভাবে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রের মারাত্মক ক্ষতি হবে। উন্নত প্রযুক্তিতে তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা হলেও দূষনের পরিমান মাত্র ১১ ভাগ কমে দুষণ দাড়াবে ৮৯ ভাগে।
রিপোর্ট অনুসারে প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সুন্দরবন থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে। যা সরকার নির্ধারিত সুন্দরবনের চারপাশে ১০ কিলোমিটার এনভাইরণমেন্টালী ক্রিটিক্যাল এরিয়ার কাছে।
তাই সেভ দ্যা সুন্দরবন বলতে চায়, সত্যিকার্থে সরকার যদি সত্য কথাই বলে থাকেন তবে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরিবেশবাদী সংগঠনের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের ব্যবস্থা নেবেন।
বিবৃতিতে সুন্দরবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করে অন্য কোথাও এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের জন্য জোর দাবী জানান।
১৪ নভেম্বর ২০১৩ :: বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।