পরিবারের চাপে সংসার বাঁধতে মেহেদী পরা। কিন্তু সে মেহেদীর রং শুকানর আগেই জগত সংসার ছেড়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরকালের গন্তবে ছুটলেন নববধু সুমা আক্তার (২০)।
গত বুধবার রাতে বাবার বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন সুমা। ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদরের উত্তর কদমতলা গ্রামে।
জানা গেছে, নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে মা ও আত্মীয়স্বজনরা ঈদের পরের দিন (১৭ অক্টোবর) জোরপূর্বক তার খালাতো ভাই আমিনুল ইসলাম খোকনের সঙ্গে বিয়ে দেয়ায়। আর এর জের ধরেই এঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে প্রতিবেশিরা।
নিহত সুমা আক্তার ঢাকার বদরুন্নেছা কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। সে ওই এলাকার মৃত বাদশা তালুকদারের মেয়ে। সুমা তার তিন ভাইবোনোর মধ্যে সবার বড়।
এদিকে একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েছে নিহতের মা তাসলিমা বেগম। পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
পুলিশ ও পারিারিক সূত্রে জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের মোরেলগঞ্জ শাখায় কর্মরত স্বামী আমিনুল ইসলাম অফিসের কাজ সেরে ওইদনি রাত সাড়ে ৭টার দিকে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। পরে সদ্য বিবাহিত স্ত্রী সুমাকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে ঘরের দোতলার রুমে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা আটকানো দেখতে পান।
অনেক ডাকাডাকির পরও দরজা না খোলায় শাশুড়ি তাসলিমা বেগমকে ডেকে এনে দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় সুমাকে দেখতে পান। তারা দ্রুত নামিয়ে সুমাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
নিহতের স্বামী ব্যাংকার আমিনুল ইসলাম বলেন, বিয়ের পর থেকেই সুমা কখনও মন খুলে কথাবার্তা বলতো না আমার সাথে। তাকে সবসময় অস্থির মনে হতো।
জানতে চাইলে বলতো এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু তার এ অস্থিরতা আত্মহত্যার কারণ হবে ভাবতে পারিনি। কারো সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল কী না তাও জানতে পারিনি।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির জানান, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়ায় পরিবারের ওপর অভিমান করেই সে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমোতি দেওয়া হয়েছে।
২৪ অক্টোবর ২০১৩ :: নিউজ ডেস্ক,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
মহিদুল ইসলাম/এসআইএইচ-নিউজ এডিটর/বিআই