‘সুন্দরবন বাঁচাও-বাংলাদেশ বাঁচাও, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবন থেকে নিরাপদ দুরত্বে সরিয়ে নাও!’ – স্লোগানে নারায়ণগঞ্জ থেকে পায়ে হেঁটে ‘নির্ভিক’ এর পদযাত্রা কর্মসূচি এখন বাগেরহাটের রামপালে।
রোববার সকাল পৌনে ৯টার দিকে তারা রামপালের ফয়লা বাজার বাসস্ট্যান্ডে এসে পৌঁছায়।
পরে সকাল সাড়ে ৯ টায় রামপালের ফয়লা বাজার বাসস্ট্যান্ড মোড়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন- ‘নির্ভিক’ এর ৪ সদস্যের দলটি তাদের ২শত ১০ কিলোমিটার পদযাত্রা কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করে।
এর আগে গতকাল (শনিবার) দুপুরে পদযাত্রা দলটি গোপালগঞ্জ হয়ে বাগেরহাটের রামপালের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। গভীর রাতে তারা খুলনা-মংলা মহাসড়কের কাটাখালী মোড়ে পৌছায় এবং সেখানে রাত্রিযাপন করে।
রোববার ভোরে তারা কাটাখালী থেকে পায়ে হেঁটে রওনা দেন ১০ কিলোমিটার দুরের রামপালের ফয়লা বাজার বাসস্ট্যান্ডে। সকাল পৌনে নয়টার দিকে ফয়লা বাজারে পৌছায় তারা।
এসময় তাদের স্বাগত জানান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে গোড়া থেকে আন্দোলন করে আসা ‘রামপাল কৃষি জমি রক্ষা কমিটি’র নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় কয়েক শত জনগন। পরে একটি সংক্ষিপ্ত পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রামপাল কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি সুশান্ত দাস বাগেরহাট ইনফোকে জানান, রোববার বিকেল ৫টায় খুলনা-মংলা সড়কে মংলা উপজেলার দিগরাজ বাজারে তাদের নিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক সমাবেশ করা হবে।
পদযাত্রায় অংশ নেওয়া নির্ভিকের ৪ সদস্য হলেন- পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন নির্ভিকের প্রধান সমন্বয়কারী ও নারায়ণগঞ্জ নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল (৫৫), নির্ভিকের কর্মী পল্লী চিকিৎসক মঞ্জুরুল আলম মুসা (৩৮), ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন (৪৫) এবং শ্রমিক ফজলুল হক (৫৫)।
ফয়লা বাজার বাসস্ট্যান্ড এ অবস্থান কালে এটিএম কামাল কথা বলেন বাগেরহাট ইনফোর সাথে। এসময় তিনি বলেন, তাদের সংগঠন নির্বিক সম্পূর্ণভাবে একটি অরাজনৈতিক, পারিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন। টিপাইমুখ বাঁধ, সীমান্তে ফেলানী হত্যা, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাসহ বিভিন্ন আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনায় তারা নির্বিক এর পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুন্দরবন রক্ষায় তাদের এই কর্মসূচিও এ ধরণের একটি উদ্যোগ।
তিনি বলেন, দেশে বিদ্যুৎ এর প্রয়োজন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচির প্রশংসনীয় কিন্তু আমাদের এই কর্মসূচি বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করা না। সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্য, আমাদের সংস্কৃতির অংশ। বাংলাদেশের প্রধান সবুজ বেষ্টনী। আমরা এই বনকে হারাতে চাই না।
তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই যে, অন্যত্র কোথাও এই কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হোক।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বাগেরহাট ইনফোকে জানান, ‘আমাদের এই প্রতিবাদ জাতীয় স্বার্থে। তাই বিএনপি বা আওয়ামী লীগ যে দলই রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাক না কেন আমরা সব সময় সত্যের পক্ষেই থাকবো। সুন্দরবন রক্ষায় আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
প্রসঙ্গত, বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের পাশে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে গত ৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহীদ মিনার থেকে রামপাল অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি করেছে ‘নির্ভিক’ নামে এই পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন।
এর আগেও ২০০৯ সালের ১৭ জুলাই টিপাইমুখ বাধ নির্মাণ বাতিলের দবিতে পায়ে হেঁটে সিলেটের জকিগঞ্জ গিয়েছিলেন এটিএম কামাল।
১৩ অক্টোবর ২০১৩ :: নিউজ ডেস্ক,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এএইচ/এজি/এসআইএইচ-নিউজ রুম/বিআই