বাগেরহাটে এক ভূয়া মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ৩ মাসের কারাদন্ড এবং ২ দন্ত চিকিৎসককে অর্থদন্ড ও পালিয়ে যাওয়া ১ দন্ত চিকিৎসকের চেম্বার সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার দুপুরে শহরের রেলরোড এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুমাউন কবির ও রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে র্যাব ও পুলিশের দুটি টিমের সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত এসময় ভূয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. দেলোয়ার হোসেনকে ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
এছাড়া ‘চিকিৎসক সনদ’ ছাড়াই দন্ত চিকিৎসক সেজে চিকিৎসা সেবা প্রদানের নামে প্রতারণার অভিযোগে ‘মিথিলা ডেন্টাল’ এর স্বত্তাধিকারী জাহিদুর রহমান মিলনকে ২৫ হাজার টাকা এবং ‘নিপা ডেন্টাল’ এর স্বত্তাধিকারী আব্দুল হামিদকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এছাড়া এসময় পালিয়ে যাওয়ায় মাসুদুল হকের ‘মল্লিক ডেন্টাল’ সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে ভুয়া মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মো: দেলোয়ার হোসেন পাইলস ও পলিপাস অপারেশন করতেন। আর বাকি ৩ জন ভুঞা দন্ত চিকিৎসক।
বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) কোন বৈধ নিবন্ধন ও সনদ ছাড়াই তারা চিকিৎসা সেবার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন বলে জানান ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলাম।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুমাউন কবির ও রবিউল ইসলাম বাগেরহাট ইনফোকে জানান, মো: দেলোয়ার হোসেন একজন রুরাল মেডিকেল প্রাক্টিশনার (আরএমপি) বা গ্রাম ডাক্তার। তার বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায়। শহরের লাইট হল প্রেক্ষাগৃহের সামনের গলিতে সম্প্রতি তিনি একটি প্রতিষ্ঠানটি বানিয়ে সেখানে রোগীদের পাইলস ও পলিপাস অপারেশন করা শুরু করেছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের সামনের সাইনবোর্ডে তার নামের আগে ডাক্তার, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ছাড়াও বিভিন্ন ডিগ্রী লেখা আছে।
তারা জানান, এসময় নামের পূর্বে ডাঃ লিখে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনা করার অপরাধে ভ্রম্যমান আদালত নিপা ডেন্টাল, মিথিলা ডেন্টাল থেকে ৫০ হাজার ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। একই অপরাধে এসময় মল্লিক ডেন্টাল নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠানে কেউ না থাকায় সেটি সিলগালা করা হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাগেরহাটের একাধিক চিকিৎসক বাগেরহাট ইনফোকে জানান, এদের কেউই চিকিৎসক না। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্র রেলরোডে চেম্বার খুলে প্রশাসনের সামনে নিজেদের নামের আগে চিকিৎসক পদবীসহ বিভিন্ন ভুয়া ডিগ্রী ব্যবহার করে সাইনবোর্ড টানিয়ে তারা রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. বাকির হোসেনের মুঠোফোনে বার বার চেষ্ট করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযান পরিচালনার খবর জানাতে পেরে এসময় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে গা ডাকা দেয় শহরের বেশ কিছু ভুয়া দন্ত চিকিৎসক।
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ :: নিউজ ডেস্ক,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এসআইএইচ-নিউজ এডিটর/বিআই