আগামিকাল থেকে শুরু হচ্ছে সুন্দরবন সংলগ্ন রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল ও সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সুন্দরবন অভিমুখে লংমার্চ। লংমার্চকে ঘিরে বাগেরহাটসহ উপকুলের জেলা গুলোতে এখন সাজসাজ রব। চলছে সর্বাত্তক প্রস্তুতি।
এরই মধ্যে লংমার্চে সমর্থন জানিয়েছে সিপিবিসহ বাম জোট, সেভ দ্যা সুন্দরবন, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, রামপাল কৃষি জমি রক্ষা কমিটি ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
এসব সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা লংমার্চে থাকছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
লংমার্চের সমর্থনে বাগেরহাটে প্রতিদিনই হচ্ছে স্বচেতনতামূলক সভা, দেওয়াল লিখন, আলোচনা সভা, মানববন্ধন, পোষ্টারিং, লিফলেট বিতরন, বিলবোর্ড স্থাপনসহ নানা কার্যক্রম। বাগেরহাটের সড়ক গুলোতে এখন সুন্দরবন রক্ষা, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল আর লংমার্চ সফল করার বিলবোর্ডে পরিপূর্ণ।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ব্যানারে শুরু হতে যাওয়া লংমার্চের যেতে ইচ্ছুকদের রেজিস্ট্রেশন প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে চলছে প্রচার প্রচারণা।
জাতীয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত লংমার্চের জন্য ২০টি বাস নিশ্চিত করা হয়েছে। আরো কয়েকটি বাস যোগ হতে পারে শেষ মুহুর্তে। এছাড়াও মাইক্রোবাস এবং কয়েকটি পিকাআপ ভ্যান থাকবে। এর বাইরেও কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পিকআপ ভ্যান নিয়ে যোগ হওয়ার কথা রয়েছে লংমার্চ বহরে। যেসব পয়েন্টে লংমার্চ বহর রাতে থাকবে সেসব এলাকার কমিটির পক্ষ থেকেও সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
রামপাল কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি সুশান্ত দাস জানান, লংমার্চ সফল করতে রামপাল উপজেলার সব মানুষের মধ্যে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। কর্মসূচিতে মংলা, রামপাল ও শরণখোলা উপজেলার হাজার হাজার মানুষ যোগদিবেন বরে আশাবাদ জানান তিনি।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির জেলা শাখার সদস্য সচিব ফকরুল হাসান জুয়েল বাগেরহাট ইনফোকে জানান, সন্দরবন রক্ষার প্রচার-প্রচারনায় ছাত্র ও সাধারন মানুষের অংশ গ্রহণ সত্যি লক্ষনীয়। তারা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছে। আর লংমার্চ সফল করতে সব ধরণের প্রস্তুতি প্রায় শেষ।
তিনি জানান, আগামীকাল (মঙ্গলবার) ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সুন্দরবন অভিমুখে লংমার্চ যাত্রা শুরু করবে। পথে সাভার-জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, মানিকগঞ্জে জনসভা ও রাত্রিযাপন।
পরদিন ২৫ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ থেকে পাটুরিয়াঘাট-গোয়ালন্দন, রাজবাড়ীতে জনসভা, বিকালে ফরিদপুরে জনসভা ও রাত্রিযাপন। ২৬ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর থেকে মধুখালী-কামারখালী-মাগুরা হয়ে ঝিনাইগাহে জনসভা, বিকালে কালিগঞ্জ হয়ে যশোরে জনসভা ও রাত্রিযাপন। ২৭ সেপ্টেম্বর যশোর থেকে নওয়াপাড়া হয়ে ফুলতলায় জনসভা, ফুলবাড়ী গেট-দৌলতপুর-খালিশপুর হয়ে বিকালে খুলনা হাদিস পার্কে জনসভা ও রাত্রিযাপন।
পরদিন ২৮ মার্চ লংমার্চের শেষ দিনে সকালে তারা বাগেরহাট শহরে পৌছাবেন। এসময় এখানে তারা একটি সমাবেশ করবেন। সেখান থেকে তারা দুপুরে মংলা উপজেলার দিগরাজ এলাকায় সমাপনী সমাবেশ ও লংমার্চের ঘোষনা পত্র পাঠ করার কথা রয়েছে।
এদিকে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দাবীতে রামপাল-মংলায় ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ মাঠে থাকার ঘোষনা দিয়েছে। এ নিয়ে নাশকতার আশংকা করছে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
অসমর্থিত সুত্রে জানা গেছে খুলনার দৌলতপুর থেকে বাগেরহাটের মংলা পর্যন্ত সড়কে পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সদস্য দের মোতায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে লংমার্চকে কেন্দ্র করে আইন-শৃংখলা অবনতি বা কোনা ধরনে আশাংকা আছে কি না জানতে চাইলে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা সন্ধায় বাংলানিউজকে জানান, এখন পর্যন্ত এধরনে কোন আশংকা করছেন না তারা। তবে যে কোন ধরনের উদ্ভত সমস্য মোকাবেলায় তারা সচেষ্ট আছেন।
তিনি জানান, এখনও পুলিশ মোতায়েনের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আইন-শৃংখলা স্বার্থে সেখানে প্রয়োজনে পুলিশ মোতায়েন করা হতে পারে।
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩ :: ইনজামামুল হক, নিউজ করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।