বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে ছাত্রশিবিরে মিছিলকে কেন্দ্র করে একটি দাখিল মাদ্রাসা ও এতিম খানায় হামলা ও ভাংচুর ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুর আড়াই টার দিকে স্থানীয় আবু হুরাইরা দাখিল মাদ্রাসা ও এতিম খানায় এই হামলা ও ভাংচুরে ঘটনা ঘটে।
এ সময়ে ওই মাদ্রাসা ও ইয়ামিত খানার ২০ এতিম শিক্ষার্থী আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলো ওই ইয়াতিম খানার ক্যাশিয়ার মো. আফজাল হোসেন ও ১০ম শ্রেনীর ছাত্র আবিদুল ইসলাম। আহতদের অবস্থা আশংকাজনক বলে পুলিশ জানায়।
মাদরাসার অধ্যক্ষ ও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল শাহাদৎ হোসাইন অভিযোগ করে বিকেলে মুঠোফোনে জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম শামীমের নের্তৃত্বে ৪০-৫০ জনের একদল কর্মী লাঠিসোটা হাতে মাদরাসা ঢুকলে আমিসহ আমার শিক্ষকরা পালিয়ে যাই। তারা আমাকে না পেয়ে মাদরাসার তিনতলা এই ভবনের মোট ১২টি কক্ষের দরজা জানালা, বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিল ও সিলিং ফ্যান ভাংচুর করে।
পরে তারা আমার কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে প্রথমে চেয়ার টেবিল, সিলিং ফ্যান, ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। আলমারি ভেঙ্গে প্রয়োজনীয় মূল্যবান কাগজপত্র বাইরে বের করে এনে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তারা মাদরাসার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও এক ছাত্রকে বেদম মারপিট করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার শরণখোলা উপজেলায় পুলিশের হাতে আটক ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে উপজেলা ছাত্র শিবির একটি মিছিল করে। ওই মিছিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ এই হামলা চালায়।
আবু হুরাইরা মাদরাসাটি জামায়াত ইসলামী পরিচালিত কিনা তা জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মুফতি আব্দুস সাত্তার এটি প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু এখানে সব রাজনৈতিক মতাদর্শের লোক সাহায্য-সহযোগিতা করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে মোরেলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম আরিফুজ্জামান শামীমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সোমবার সকালে জামায়াতের শহরেব একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল থেকে তারা আওয়ামী লীগ, সরকার ও ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের উষ্কানিমূলক স্লোগান দেয়।
দুপুরে আমরা জানতে পারি জামায়াত ইসলামী পরিচালিত ঐ মাদরাসা থেকে উপজেলার ছাত্রলীগ নেতাদের উপর হামলা চালানোর জন্য কয়েকশ জামায়াত ও ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মী জড়ো হয়েছে। আমরা তাদের প্রতিহত করতে সেখানে গেলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে মাদরাসা ভবন থেকে দুইজনকে ধরে মৃদু ধোলাই দিয়ে পুলিশে দেয়া হয়েছে।
মোড়েলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলাউদ্দিন বাগেরহাট ইনফোকে জানান, সোমবার সকালে উপজেলা ছাত্রশিবির নেতা কর্মীদের মুক্তির দাবীতে উপজেলা সদরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এই ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে মোড়েলগঞ্জের আবু হুরাইরা দাখিল মাদ্রাসা ও ইয়াতিম খানায় হামলা ও ভাংচুর করে।
তবে মোরেলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন হামলা ও ভাংচুরের কথা অস্বীকার করে বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, জামায়াত শিবিরের সকালে একটি মিছিল করে। দুপুরে তারা আবার মাদরাসা থেকে একটি মিছিলের প্রস্তুতি নেয়।
তখন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা সেখানে গেলে জামায়াত-শিবিরের সমর্থকরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তারা মাদরাসার দুজনকে ধরে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ :: নিউজ ডেস্ক,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এসআইএইচ-নিউজ এডিটর/বিআই