তিন দিন ঈদের ছুটিতে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালীর ইউনিয়নের মধ্য চন্ডিপুর গ্রামে কলেজ ছাত্রীকে গলাটিপে হত্যা, একই ইউনিয়নের চিংড়াখালী গ্রামে গৃহবধূর শ্রীলতাহানী ও সদর ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনায় মোরেলগঞ্জ থানায় ৪টি পৃথক মামলা দায়ের হছেছে। হত্যা ও শ্রীলতাহানীর মামলায় ২ জন আটক এবং অপহৃতাকে চুয়াড়াঙ্গা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, উপজেলা চিংড়াখালী ইউনিয়নের মধ্য চন্ডিপুর গ্রামের ফারুক হোসেন মোল্যার কন্যা পিরোজপুর সরকারি সহরোওয়ার্দী কলেজের অনার্স ২য় বর্ষ অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী আহসানারা আক্তার রুমি(২০)কে ৯ আগষ্ট ঈদের দিন বিকেলে মারপিটের পর গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী প্রিন্স (২৮) তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। প্রিন্স একই গ্রামের মৃত. আজাদ হোসেনের পুত্র।
এ ঘটনায় মৃত রুমির পিতা বাদি হয়ে পরের দিন (শনিবার) প্রিন্স সহ ৭ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, উপজেলার একই ইউনিয়নের চিংড়াখালী গ্রামে এক গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা ও মারপিট করার অভিযোগে গতকাল (শনিবার) ১০ আগষ্ট মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের পর পুলিশ ধর্ষণের চেষ্টাকারী লম্পট জাহাঙ্গীর শেখকে গ্রেফতার করেছে।
জানা গেছে, অত্র গ্রামের জনৈক কবির শেখ জীবিকার প্রয়োজনে শহরে অবস্থান করার সুযোগে তার স্ত্রীকে(৩৮) প্রতিবেশী চাচাতো দেবর মৃত লেহাজ উদ্দিন শেখের পুত্র জাহাঙ্গীর শেখ (৪৫) কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। একপর্যায় বিষয়টি সে তার স্বামী ও নিকটতম আত্মিয় স্বজনদের অবহিত করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয় লম্পট জাহাঙ্গীর শেখ। ঘটনার দিন ৯ আগষ্ট বিকেলে গৃহবধূর পুত্র রনি শেখ গ্রামের বাজারের একটি দোকানে যাবার সুযোগে জাহাঙ্গীর শেখ অজান্তে ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এতে ব্যর্থ হয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করে।
এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদি হয়ে জাহাঙ্গীর শেখকে আসামী করে মোরেলগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা দায়েরের খবর জানাতে পেরে আসামী পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে ঐদিনই রাতে গৃহবধূকে পুত্র রনি শেখকে মারপিট করে আহত করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মারপিটে গুরুতর আহত রনি শেখকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ও গৃহবধূর স্ত্রী রনি শেখ বাদি হয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় পৃথক আরএকটি মামলা দায়ের করেন।
এছাড়াও মোরেলগঞ্জ সদর উপজেলার ভাইজোড়া গ্রামের ছালাম হাওলাদারের অপহৃত কন্যা নাজমুন নাহার সাথীকে অপহরণের মামলায় চুয়াড়াঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়েছে তাকে।
থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, মোরেলগঞ্জ সদর উপজেলার ভাইজোড়া গ্রামের ছালাম হাওলাদারের কন্যা নাজমুন নাহার সাথীকে (১৯) অপহরণের দায়ে গত মাসের (জুলাই) ৫তারিখে তার পিতা ছালাম হাওলাদার মোরেলগঞ্জ থানায় অপহরণের মামলা দায়ের কারেন।
মামলার এজাহারে একই গ্রামের জয়নাল ওরফে জনু মল্লিকের পুত্র সোহাগ মল্লিক তকে অপহরণ করেছে বলে অভিয়োগ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ৯ আগষ্ট চুয়াড়াঙ্গা থানা পুলিশ সাথীকে উদ্ধার করে এবং পরদিন শনিবার মোরেলগঞ্জ থানায় হস্তান্ত করা হয়।
এসব ঘটনার ব্যাপারে মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আসলা উদ্দিন বাগেরহাট ইনফোকে জানান, শ্রীলতাহানীর ও হত্যা মামলায় ২ জনকে এরই মধ্যে আটক করেছে মোরেলগঞ্জ থান পুলিশ।
এছাড়া অপহরনের মামলায় অপহৃতা নাজমুন নাহার সাথীকে উদ্ধারে পর তাকে ডাক্তরি পরিক্ষার জন্য আজ বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠান হয়। ডাক্তার না থাকায় আগামিকাল (সোমবার) ডাক্তরি পরিক্ষার পর তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্ত করা হবে।
এসব মামলার বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।