নির্মাণের ১৬ বছর না যেতেই বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের বিভিন্ন স্থানের কলাম ও বীমে ফাটল দেখা দেওয়ায় যেকোনো মূহুর্তে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ভবনটিতে।
রোববার দুপুরে জেলার গুরুত্বপূর্ণ ওই স্থাপনাটির বিভিন্ন অংশের ফাটল ও খসে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বর্তমানে ভবনের ফাটল ধরা অংশ গাছের গুড়ি (বল্লি) দিয়ে ঠেস দিয়ে রাখার চেষ্টা করছে গণপূর্ত বিভাগ। রোববার দুপুরে ভবনটির বিভিন্ন অংশের খসে পড়া আস্তরণ ঠেকাতে গণপূর্ত বিভাগ শাল গাছের বড় বড় বল্লি দিয়ে ঠেস দিতে শুরু করায় এ আতঙ্ক আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ে।
১৬ বছর আগে শহরের খাদ্দার গ্রামে গণপূর্ত বিভাগের এ ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৬ সালের ২৭ জানুয়ারি দ্বিতল ভবনটিতে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই ভবনের উদ্বোধন করেন।
রোববার দুপুরে সরজমিন আদালত প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, গণপূর্ত বিভাগের কর্মচারীরা বড় বড় শাল গাছের বল্লি দিয়ে ভবনের ঝুকিপূর্ণ স্থানে ঠেস দিচ্ছে। এর ফলে আদালতে আসা বিচার প্রাথী, বিচারক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সরকারি কৌশলী শৎরত চন্দ্র মজুমদার বলেন, “বর্তমানে ভবনটির যে অবস্থা তাতে রানা প্লাজা ধসের মতো বড় ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। সেই সময়ের ঠিকাদারদের খুঁজে বের করা দরকার।”
জেলার শরণখোলা থেকে আসা বিচার প্রার্থী খালেদা বেগম জানান, প্রায়ই মামলা সংক্রান্ত কারণে তাকে আদালতে আসতে হয়। দুপুরে আদালত ভবনের এ অবস্থা দেখে তিনি দোতলায় ওঠেন নি।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতের স্পেশাল পিপি খান সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “জেলার গুরুত্বপূ্র্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বিচারের কাজ চলছে। ধস ঠেকাতে গাছ দিয়ে যেভাবে ঠেস দিচ্ছে সেটা কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নয়।”
তিনি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অনুরোধ জানান।
এ ব্যাপারে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এ কে এম সেলিম জানান, বর্তমানে ভবনটির এ অবস্থায় বিচারক, কর্মকর্তা কর্মচারী, আইনজীবী ও বিচারপ্রাথীদের আতংকের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
বাগেরহাট গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২২ জুলাই জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভবনের কলাম ও বীমে ফাটলসহ কংক্রিট খসে পড়ার বিষয়টি সরেজমিন পরির্দশন করে ঝুকিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে সাতটি সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ বরাবর পত্র প্রেরণ করেন। তবে দীর্ঘ এক বছর অতিক্রম হলেও পরিদর্শনকারী দলের এ সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন না হওয়ায় সাভার ট্রাজেডির পর নতুন করে নড়ে চড়ে বসে গণপূর্ত বিভাগ।
এ বিষয়ে বাগেরহাট গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নিতিশ চন্দ্র পাল জানান, গত ২০ মে খুলনা গণপূর্ত বিভাগ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ জেলা ও দায়রা জজ ভবন পরিদর্শন করে ফাটলকৃত কলাম ও বীমের স্থানে গাছের বল্লি দিয়ে সার্পোট দিতে নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে।
২৬-০৫-২০১৩ :: নিউজ করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।