বিশেষ প্রতিবেদন::
২৫ মে, শনিবার। ভয়াল ঘূর্ণিঝড় আইলার চতুর্থ বর্ষপর্তি। ২০০৯ সালের এই দিন সকালে ঘূর্ণিঝড় আইলা মোড়েলগঞ্জে আঘাত হানে। বিধ্বস্ত হয় গোটা মোড়েলগঞ্জের বিস্তীর্ণ জনপদ।
আইলায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বাস্তুহারা অনেকেই এখনো মাথা গোঁজার ঠাই খুঁজে পায়নি। সরকারি বেসরকারি নানা সংস্থা আইলা উপদ্রুত এলাকায় কাজ করলেও ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই তেমন কোনো সাহায্য পাননি।
প্রলয়ঙ্কারী আইলায় উপজেলার ৩ জনের প্রাণহানিসহ ১৬ ইউনিয়নের ৪২৬ বর্গ কিলোমিটার জায়গা প্রবল জলোচ্ছ্বাসে পানির নীচে নিমজ্জিত হয়। সে সময় নিখোঁজ হন ৫ জেলে। এখনো তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি।
এছাড়া বেড়িবাঁধ ভেঙে বানের তোড়ে নদী, পুকুর, খাল, মৎস্য ঘের মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৭/৮ ফুট উচ্চতার পানিতে নীচে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় লোকজন তড়িঘড়ি করে মালামাল নিরাপদে সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়। ফসল নষ্ট ও গবাদি পশুর প্রাণহানি সহ ব্যাপক ক্ষতির শিকার হন কৃষকসহ উপজেলার সাধারণ মানুষ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জোহর আলী আমাদের জানান, ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলায় ১৬ ইউনিয়নের ১৪ হাজার ৫৩১টি পুকুর, ১০ হাজার ৩৬৮টি ঘের ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছিল ১৬৪ দশমিক ৫ লক্ষাধিক টাকা। রাস্তা সম্পূর্র্ণ ক্ষতি হয়েছিল ২২২ কিলোমিটার এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছিল ৪৪৪ কিলোমিটার । এছাড়া ১১৯টি ব্রিজ ও ৭০টি কালভার্ট এবং সাড়ে ৫২ কিলোমিটার বাঁধ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। মারা গিয়েছিল ১৫ হাজার ৪২৮টি গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী।
এদিকে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, আইলার চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এলাকার মানুষ আইলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ আসলেও তার যথাযথ বণ্টনের অভাবে অনেকেই ত্রাণ পাননি। ত্রাণ সামগ্রীর অধিকাংশই লুটপাট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।
এছাড়াও মাথা গোজার মতো ঠাইয়ের ব্যবস্থা করতে পারেননি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। তাদের সবাই আইলা বিধ্বস্ত মোরেলগঞ্জবাসী পুনর্বাসন সহ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
২৫-০৫-২০১৩ :: বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।