বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষরিত।
এ লক্ষ্যে শনিবার সকালে বাংলাদেশ আসেন ভারতের বিদ্যুৎ সচিব উমা শঙ্কর। সন্ধ্যায় এ ব্যাপারেএকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
১৩২০ মেঘাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নামকরণ করা হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানি লিঃ (বিআইএফপিসিএল)।
উমা শঙ্করের এ সফরে তিনটি চুক্তি হয়েছে। এগুলো হলো- বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ), চুক্তির বাসত্মবায়ন (আইএ) এবং সমতাভিত্তিক (৫০:৫০) যৌথ চুক্তি (জেভিএ) সম্পাদন।
উল্লেখ, গত বছর ১ মার্চ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রকল্প উন্নয়নের জন্য সমতার ভিত্তিতে এনটিপিসি এবং বিপিডিবি মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর লক্ষ্য ছিল- দুই দেশের অংশ গ্রহণে একটি যৌথ কোম্পানি চালু করা। যা ২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর এই যৌথ কোম্পানির যাত্রা শুরু করে। সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ভারতীয় জাতীয় বিদ্যুৎ কর্পোরেশন ( এনটিপিসি) মধ্যে সমতার ভিত্তিতে ১৫০ কোটি ডলারের এই প্রকল্পের চুক্তি হয়েছে। এই টাকার ৭০ ভাগ আসবে ঋণ থেকে এবং ৩০ ভাগ পিডিবি ও এনটিপিসি যৌথ অর্থায়নে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভারতের বিদ্যুৎ সচিব বলেন, রামপালে তারা উচ্চপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং পরিবশে দুষণের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেবেন। প্রকল্পটির চিমনির উচ্চতা ২৭৫ মিটার, যার কার্যকারিতা ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এরফলে পরিবেশের ওপর কোন বিরুপ প্রভাব পড়বে না বলে উমা শঙ্কর জানান।
এর আগে ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকা এবং নয়াদিল্লি রামপালে বিশাল এ প্রকল্প স্থাপনে যৌথচুক্তি স্বাক্ষর করে। এনটিপিসি এটি স্থাপনে সম্ভাব্য সমীক্ষা ও অন্যান্য কাজ শেষ করে এনেছেন।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লা দিয়ে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তারই বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
অবশ্য রামপালে প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সুন্দরবন হুমকির মুখে পড়বে এমন শঙ্কা প্রকাশ করে আসছে দেশি-বিদেশি পরিবেশবিদ, বিশেষজ্ঞ ও রামপালের স্থানীয় বাসিন্দারা। হাই কোর্টও সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন বন্ধ করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে।
তবে সরকার ও সংশিস্নষ্টদের পক্ষ থেকে এসব প্রসঙ্গে তাদের স্পষ্টতা তুলেনা ধরে, পরিবেশ দূষণ ও প্রতিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সর্তক থেকেই রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান হয়েছে।
এদিকে নানা মহলের সমালচনার পরও এ চুক্তি স্বাক্ষরকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার এ জন্য সরকার জনগন ও পরিবেশের জন্য মরন ফাঁদ তৈরি করছে।
চুক্তি স্বাক্ষর এর বিষয়টি নিশ্চিত হবার পর স্থানীয় ও সুন্দরবন নির্ভর কর্ম জীবিদের মধ্যে ব্যাপক খোবের এ সৃষ্টি হয়েছে। তার এই চুক্তি বাতিল করা না হলে প্রকল্পটি প্রতি হতের ঘোষনা দিয়েছেন। সেই সাথে জনগনের কথা না ভেবে স্থানীয় সরকার দলীয় নেতাদের প্রকল্পটিতে সমর্থনের সমালচনা করেছে স্থানীয়রা।