মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আঘাতহানা কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বাগেরহাটে।
সন্ধ্যা ৬:৪৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তান্ডব চালান বছরের প্রথম এ কালবৈশাখী ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা এলাকা।
এদিকে সার্কিট ব্রেকার পুড়ে যাওয়ায় কারনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ।
বঝড়ের আঘাতে শুধু মোরেলগঞ্জ এলাকয়ই বিধ্বস্ত হয়েছে দেড়শতাধিক বাড়ি-ঘর। এসব গ্রামে শতশত গৃহহারা মানুষ খোলা আকাশে নিচে রয়েছে।
এছাড়ে শিলাবৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সমশের আলী, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হল মিত্রডাঙ্গা, জোকা ও গাজীরঘাট। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিত্রডাঙ্গা।
মিত্রডাঙ্গার বাসিন্দা মো. সামছুর রহমান শেখ (৭৬) বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে হঠাৎ মেঘ করে কয়েক মিনিটের ঝড়ে ৫০/৬০টি ঘর উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এর ১০/১৫ মিনিট পর ঝড় কিছুটা কমে এলে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়।
ঝড়ে এ গ্রামের মিত্রডাঙ্গা আল্ কোবা জামে মসজিদ ও মিত্রডাঙ্গা জামে মসজিদের টিনের চাল উড়ে গেছে এবং ইটের দেয়াল ফেটে গেছে। এছাড়া অসংখ্য গাছ উপড়ে বা ভেঙে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা: মোজাম্মেল হোসেন, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো: শুকুর আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জোহর আলী ও দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা কর্মকর্তা মো: আশরাফ হোসেন।
উপজেলা কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, সবমিলিয়ে এ ঝড়ে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। দৈবজ্ঞহাটি, হোগলাপাশা, চিংড়াখালী, রামচন্দ্রপুর ও বনগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার বিঘা জমির কলাবাগান ধ্বংস হয়ে গেছে, অর্ধ লক্ষাধিক টাকার হাঁস-মুরগী মারা গেছে এবং ৫ জন মহিলাসহ কমপক্ষে ২০জন লোক আহত হয়েছে।
বাগেরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হীরেন্দ্রনাথ হাওলাদার জানান, মৌসুমের প্রথম ঝড়-বৃষ্টিতে সার্বিকভাবে এলাকার কৃষির উপকার হয়েছে। তবে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের সামান্য ক্ষতি হতে পারে।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা-ব্যবস্থাপক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ঝড়ের কারণে পল্লী বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে, খুঁট ভেঙে ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবারের আগে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা সম্ভব হবে না।
অলীপ ঘটক ও মশিউর রহমান মাসুমের সহায়তায় ইনজামামুল হক।