বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার লকপুরে এপিসি ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড নামে একটি ওষুধ ফ্যাক্টরিতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুস্কৃতকারীরা।
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে ফ্যাক্টরির দারোয়ানকে বেঁধে রেখে গান-পাউডার দিয়ে লাগানো এ আগুনে ফ্যাক্টরির ভবন ধসে পড়ে। এতে ফ্যাক্টরিটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
ফ্যাক্টরির ম্যানেজার আলী আজম জানান, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে খুলনা-বাগেরহাট সড়ক সংলগ্ন এই ফ্যাক্টরির প্রধান ফটকে নিয়োজিত দারোয়ান মিজান শেখকে বাইরে বেঁধে রেখে ১৫/২০ জনের একদল দুর্বৃত্ত ফ্যাক্টরিতে ঢুকে পড়ে।
দুর্বৃত্তরা পাঞ্জাবি-টুপি ও মুখোশ পরা ছিল। পরে একে একে প্রতিটি কক্ষে ঢুকে গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এতে পুড়ে যায় ওষুধ ফ্যাক্টরির সর্বস্ব। এসময় তারা পুরো ভবনের জানালা ও দরজা ভেঙে ফেলে। এই নাশকতায় ধসে পড়ে বিল্ডিংয়ের দেয়াল।
খবর পেয়ে গভীর রাতে খুলনা-বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ফ্যাক্টরিটি।
খুলনা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক, জেলা আ’লীগ নেতা এপিসি ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের মালিক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. বাহারুল ইসলাম এ ঘটনার জন্য সরাসরি জামায়াত-শিবরকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা তাদের পরিকল্পিত নাশকতা। এটি তাদের নৃশংসতার নিকৃষ্ট উদাহরণ’’।
ডা. বাহারুল ইসলাম জানান, গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে প্রথম থেকে জামায়াত-শিবির যেভাবে দেশব্যাপী হত্যাযজ্ঞ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে এটি তারই একটা অংশ। এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নয় প্রতিরোধ করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. ফায়েকুজ্জামান, বাগেরহাট জেলা পরিষদের প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু, ডিআইজি মোঃ দিদার আহম্মেদ, বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার রফিকুল ইসলাম, ফকিরহাট থানা অফিসার ইনর্চাজ (সার্বিক) মোঃ মাসুদুল আলম সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীগন।
ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটির মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তবে এখনও পর্যন্ত বলতে পারছি না আসলে ঘটনাটি কে বা কারা ঘটিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এর আসল রহস্য বের করে অবিলম্বে আসামীদের আটকের আশাবাদ জানান তিনি। এছাড়া এখনো পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়নি বলে তিনি জানান।
এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফকিরহাট উপজেলা জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক মোফাজ্জেল হায়দার।