নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
সবার বাড়িই সুন্দরবনের পাশে। তবে বনটা সেভাবে ঘুরে দেখা হয়নি তাদের। দূরদূরান্ত থেকে কত মানুষ সুন্দরবনে ঘুরতে আসে! সেই আক্ষেপ থেকে নিজেরা মিলে বনে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা আঁটে ৬ কিশোর ও যুবক।
হাঁটতে হাঁটতে চলে যায় বনের গহিনে। তবে একপর্যায়ে পথ হারিয়ে ঝড়বৃষ্টিতেই বনের ভেতর আটকে পড়ে তারা। সন্ধ্যা নামে। শুরু হয় কালবৈশাখী। সবার মনে তখন ভয়। এই বুঝি বাঘ এলো। পরে গাছের ডালে চড়ে বসে তারা।
এরপর কিশোরদের একজন ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা চায়। আজ বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে বনের পাঁচ কিলোমিটার ভেতর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। ধানসাগর নৌ পুলিশের সহায়তায় শরণখোলা থানার পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
ওই কিশোর ও যুবকেরা হলো সুন্দরবনসংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামের ইমরান খলিফা, মাইনুল ইসলাম, আব্দুর রহিম, সাইমন খলিফা, জুবায়ের খলিফা ও জয় খলিফা।
উদ্ধারের পর তারা পুলিশকে জানায়, গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় তারা হেঁটে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ঘুরতে ঘুরতে একপর্যায়ে পথ হারিয়ে ফেলে। এতে ভয় পেয়ে যায়। তাদের একজন রাত ১০টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহায়তা চায়।
৯৯৯-এ ফোন করা রায়েন্দা সরকারি পাইলট হাইস্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী জয় খলিফা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলে, ‘বন দেখতেই আমরা সুন্দরবনে ঢুকেছিলাম। নিজেদের সাথে সামান্য পানি ও চিপস নিয়ে হেঁটে বনে ভেতর যাই। কিন্তু এভাবে পথ ভুলে হারাব, তা ভাবতেও পারেনি। প্রচণ্ড বৃষ্টি আর বাতাস শুরু হয়। আসতে আসতে সন্ধ্যা নামতে থাকে। তখন আমরা গাছে আশ্রয় নিই। খাবার-পানিও শেষ হয়ে যায়। সবার মাঝেই তখন বাঘ আতঙ্ক। রাত বাড়তে থাকে, তখন মনে পড়ে ৯৯৯-এর কথা। এরপর ফোন করে আমরা সহযোগিতা চাই।’
বাগেরহাটের শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস কে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, ৬ কিশোর পূর্ব সুন্দরবনের ধানসাগর ফরেস্ট স্টেশনসংলগ্ন বনে ঘুরতে যায়। বন বিভাগের অগোচরেই তারা বনে ঢুকে ঘুরতে ঘুরতে প্রায় ৫ কিলোমিটার গহিনে চলে যায়। ফেরার সময় পথ হারায়, সন্ধ্যা নেমে আসে।
এরই মধ্যে শুরু হয় কালবৈশাখী। তাদের মধ্যে একজন রাত ১০টার দিকে জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে বিষয়টি জানতে পারে শরণখোলা থানার পুলিশ। পরে ধানসাগর নৌ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রাত ১১টা থেকে অভিযান চালিয়ে ভোরে তাদের উদ্ধার করা গেছে।
ওসি জানান, তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তবে সবাই সুস্থ আছে। দুপুরে সবাইকে মিষ্টি খাইয়ে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এসআই/আরএস/বিআর/২৮ মে, ২০২০