নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
লাল, নীল, বেগুনী, সবুজ; প্রত্যেকের হাতে-মুখেই নানা রঙের ছোঁয়া। পরনের সাদা শাড়ি, থ্রি-পিসটাতেও লেগেছে রঙের ছাপ। তবে তাতে আক্ষেপ নেই কারই। বরং উচ্ছ্বাস আর আনন্দে উদ্বেলিত সবাই। গানের ছন্দে, বাজনার তালে নেচে গেয়ে রঙ মেখে এই উদযাপন যেন এক সাথে আবার শৈশবে ফেরার।
শতবর্ষী বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দুই দিনব্যাপী পুনর্মিলনী উৎসবের শেষ দিন বুধবার সকাল থেকে এই চিত্র ছিল বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। দীর্ঘদিন পর প্রিয় ক্যাম্পাস আর বন্ধু-সহপাঠীদের কাছে পেয়ে সকাল থেকে রঙের খেলায় মেতে ছিলেন সবাই।
পুনর্মিলনী উৎসবের এ দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছিল রঙ উৎসব। এতে সহস্রাধীন প্রাক্তন ছাত্রী অংশ নেন। সহপাঠীদের সঙ্গে নেচে গেয়ে এই উদযাপনকে অনেকেই বলছেন স্মৃতিময় রঙিন শৈশবে ফেরার আয়োজন।
উৎসবে অংশ নেওয়া রোমেনা আক্তার বলেন, আজকের দিনটা খুব খুব ভালো ছিল। প্রায় তিন দশক আগে স্কুল থেকে বেরিয়েছি। আজ সবাই মিলে এক সাথে অনেক আনন্দ করছি। গতকাল প্রথম দিনটাও অনেক সুন্দর ছিল। অনেকদিন পর সবার সাথে খুব এক্সাইটেড। আজ সব পুরনো সহপাঠীদের নিয়ে নিজের মত উৎযাপন হলো।
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক মাসুমা রুনা বলেন, ১৯৬২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা দেড় হাজার ছাত্রী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সবাই দারুণ আনন্দিত। আজ দ্বিতীয় দিনের শুরু হয়েছে রঙ উৎসবের মধ্য দিয়ে। রঙের খেলায় সবাই যেন আজ স্মৃতিময় রঙিন শৈশবে ফিরে গেছিল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে আজ রাতে শেষ হবে এই উৎসব।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পুনর্মিলনী উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর শোভাযাত্র, স্মৃতিচারণ এবং প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল প্রথম দিনে। বুধবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট জেলা স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন কনক চাপা, প্রীতম হাসানসহ বিভিন্ন ব্যান্ড ও শিল্পীরা।
সমাপনী আয়োজন শুরু হবে ৭১ ও ২৪ এর শহীদদের স্মরণ ও মোমবাতি প্রজ্বলণের মধ্য দিয়ে। থাকছে র্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণ।
১৯১৮ সালে বাগেরহাট শহরের প্রাণ কেন্দ্রে গড়ে ওঠা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বয়স এখন ১০৭ বছর। শুরুতে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করা স্কুলটি ১৯৩৮ সালে ‘মনোমোহিনী উচ্চ ইংরেজী বালিকা বিদ্যালয়’ নাম করন করা হয়। স্বাধীনতার পর সরকারিকরণের মাধ্যমে এর নামকরণ করা হয় ‘বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’।
এসআই/আইএইচ/বিআই/২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪