ডেস্ক রিপোর্ট, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
ঘূর্ণিঝড় আম্পান বাংলাদেশ উপকূলের ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসার পর মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর ‘মহাবিপদ সংকেত’ দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে সুন্দরবনের কাছ দিয়ে অতি প্রবল এ ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরকে আগের মতই ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আম্পান ধেয়ে আসায় ভারত ও বাংলাদেশে মঙ্গলবার থেকে উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান তার বর্তমান অবস্থান থেকে আরও উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সুন্দরবনের কাছ দিয়ে বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
তবে তীব্রতা কিছুটা কমে গিয়ে সুপার সাইক্লোন আম্পান অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এটি ধীরে ধীরে আরও শক্তি হারিয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অতিক্রম করবে দেশের উপকূলে। সে সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড় জনিত জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা:
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঝড়ো হাওয়ার সতর্কতা:
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ১৪০-১৬০ কিমি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
জেলেদের জন্য সতর্কতা:
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, এটি বুধবার (২০ মে) বিকেল/সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গে দিঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়ার মধ্যবর্তী কোনো এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে। ঘূর্ণিঝড়ে বর্তমান অভিমুখ অনুযায়ী এটি পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন ও আশেপাশের এলাকায় প্রথমে আঘাত হেনে বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হবে। এতে কমে যাবে আম্পানের ক্ষিপ্রতা।
বুধবার (২০মে) রাতেই এটির তীব্রতা কমে গিয়ে ১৮০ কিমির নিচে নেমে আসবে। এরপর বৃহস্পতিবার (২১ মে) তীব্রতা আরও কমে ধীরে ধীরে এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দমকা হাওয়ার সঙ্গে হালকা বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়বে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে আগামী পাঁচদিনে সেটা আবার কমে আসবে। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণও হতে পারে।
এসআই/আইএইচ/বিআই/২০ মে, ২০২০