বাগেরহাট সদরে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ কালু শেখ (৩২) মারা গেছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত কালু সদর উপজেলার কালিয়া এলাকার আসলাম হোসেন বাবুলের ছেলে।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাগেরহাট সদরের নাগেরবাজার এলাকায় যুবলীগ নেতা খান আবু বক্কর ও পৌর কাউন্সিলর মিনা হাসিবুল ইসলাম শিপন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় কালু শেখ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে রাত তিনটায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে আরো চার-পাঁচজন আহত হয়েছে। তবে তাদের নাম পাওয়া যায়নি।
বিক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা এ সময়ে এক যুবলীগ নেতার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। এ সময়ে মারপিটে হাসিবুল ইসলাম নামের এক যুবলীগ নেতা আহত হয়। ঘটনার পর নাগেরবাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, বাগেরহাট গনপূর্ত বিভাগের প্রায় ৫ কোটি টাকার একটি টেন্ডার দাখিলকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুর থেকে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে সন্ধ্যায় যুবলীগের এক নেতাকে লক্ষ্য করে বিবাদমান অপর গ্রুপের নেতা-কর্মীরা গুলি করে। গুলিটি লক্ষ্য ভেদ হয়ে পাশে থাকা এক শিশু সৈকতের (৬) দুই উরুতে বিদ্ধ হয়। রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। এসময়ে কালু গুলিবিদ্ধসহ যুবলীগ নেতা হাসিবুল আহত হয়।
পুলিশ জানায়, বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান হাবিবুর রহমানের সঙ্গে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও যুবলীগ সভাপতি শিপন মিনা ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকি তালুকদারের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছে। সোমবার দুপুরে বাগেরহাট গণপূর্ত বিভাগের একটি দরপত্র দাখিল করাকে কেন্দ্র করে এই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে রাতের ওই সংঘর্ষ হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
পৌর কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের সভাপতি শিপন মিনা অভিযোগ করেন, আমরা কয়েকজন মিলে পৌর মেয়রের কাছে তার ভাগ্নে হাসিবের বিরুদ্ধে নালিশ করতে গিয়েছিলাম। এ সময় মেয়রের বাড়ির সামনে এবং ছাদ থেকে আমাদের উপর সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। এতে কালুর মাথায় গুলি লাগে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
তবে পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান পাল্টা অভিযোগ করেন, শিপন মিনার নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন সন্ত্রাসী আকস্মিক তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ১০/১২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ ভাংচুর করে। এ সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না বলেও জানান।
শিশু সৈকতকে প্রথমে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আজ সকালে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এখনও এ ঘটনার রেশ না কাটায় শহরে উত্তেজনা কর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শহরে কালুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে শহরের নাগের বাজার, রেল রোড, খারদ্বার এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।