ক্রীড়া ডেস্ক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
করোনাভাইরাসে বিপর্যন্ত পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। চলছে সাধারণ ছুটি, মানুষের বের হওয়া মানা ঘর থেকে। এমন পরিস্থিতিতে যে যার মত সামর্থ অনুযায়ী পাশে দাঁড়াচ্ছেন অসহায় মানুষের।
মিরপুরের অসহায়দের সাহায্যের পাশাপাশি নিজ জেলা বাগেরহাটের মানুষের পাশেও দাড়াতে ২০টি ইনফ্রারেড থার্মোমিটার বা থার্মল স্কানার দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেন।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে রুবেলের পাঠানো এসব ইনফ্রারেড থার্মোমিটার গ্রহণ করেছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। এসময় পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য বিভাগ ছাড়াও যেসব অফিসে বেশি মানুষের জনসমাগম আছে সেখানে এই থার্মোমিটার ব্যবহার করবে। ২০টি ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল, সদর হাসপাতাল মিলিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৮টি, জেলা পুলিশের ৬টি, জেলা প্রশাসন ৩টি, সদর উপজেলা পরিষদ ২টি ও বাগেরহাট পৌরসভা ১টি ব্যবহার করবে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়ে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আধুনিক সরঞ্জাম মেডিকেল ইনফ্রারেড থার্মোমিটার। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার এই সময়ে এটি পাওয়ায় আমরা উপকৃত হয়েছি। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রথমেই আমরা এটি দিয়ে শরীর স্ক্যান করলে তার শরীরের তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে পারব।
ক্রিকেটার রুবেল হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন সাধারণ মানুষের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচ্য বিষয়। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ প্রথমে যাতে শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করতে পারে সেজন্য এগুলো দেয়া।
করোনার এই সময়ে সবাই বিপর্যস্ত। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাগেরহাটও। জেলাবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এটি আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস।’
এনিয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে রুবেল হোসেন লিখেছেন, আপনারা জানেন কিছুদিন আগে আমাদের বাগেরহাটের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় ভাই, যে একটি দৃষ্টান্ত উদ্যোগ নিয়েছেন। ডক্টরের কাছে রোগী নয়, রোগীর কাছে ডক্টর- একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছেন বাগেরহাটে। তা বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে সাড়া দিয়েছে। তার যে এই চিন্তা শক্তি, মেইনলি ওটা থেকে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি এবং তার সাথে আলোচনা করে কিছু ভাল পরামর্শ পেয়েছি।
যেহেতু আমি বাগেরহাটের সন্তান আমার নিজ দায়িত্ব থেকে এবং মানবতার বিষয়টি বিবেচনা করে আমি এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছি। আজ করোনাভাইরাস শুধু বাংলাদেশে নয় সারাবিশ্ব এটা নিয়ে চিন্তিত। এই জীবন যুদ্ধে জিততে হলে চিকিৎসার যে ফর্মুলা সেটা আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন যাচ্ছে কিন্তু কিছু সাবধানতা পারে আমাদের এই জীবনটাকে নিরাপদ রাখতে।
আমরাই পারি আমাদের বাঁচাতে। তারই অংশ হিসেবে যে শরীরের জ্বর তাপমাত্রা কতটুকু আছে স্বাভাবিক পর্যায়ে থেকে অস্বাভাবিক পর্যায়ে গেলে যাতে আমরা সহজে অনুমান করতে পারবো। আর এই লক্ষণ নির্ধারণ করার জন্যই আসলে আমার মাথায় আসলো যে এতদিন তো খাবার দিলাম আর যেহেতু এখন এটা পুরো বাংলাদেশে দিন দিন বেড়েই চলেছে তাই আমার কাছে মনে হল ইনফ্রারেড থার্মল স্কানার দিয়ে একটু সহযোগিতা করি। এতে করে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এটা নির্ণয় করা যায়। আর নির্ণয় করলেই সবাই যে একটু দুশ্চিন্তায় আছেন, একটু হলেও মুক্তি পাওয়া যায়।
আর এই ভাবেই আসলে সবাই সচেতন থাকতে পারবো। আজ নিজে বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। তাই আসুন আমরা যে যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসি। ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই আমরা ভয়াবহ এই সংকটময় মুহূর্ত কাটিয়ে উঠতে পারবো।
এসআই/আইএইচ/বিআই/১৫ এপ্রিল, ২০২০