শহর জুড়ে সাজ সাজ রব ।। সাবেক কমিটিই বহাল থাকছে?
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বাগেরহাটের খানজাহান আলী ডিগ্রি কলেজ মাঠের সম্মেলনকে ঘিরে সাজ সাজ রব শহর জুড়ে। উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে নেতাকর্মীদের মাঝে।
সম্মেলনকে ঘিরে শহর জুড়ে তৈরি করা হয়েছে শতাধিক তোরণ। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে শোভা পাচ্ছে ব্যানার, ফেসটুন। যেখানে শোভা পাচ্ছে দলের শীর্ষ নেতাসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্বরত ও পদ প্রত্যাশীদের ছবি।
দলীয় পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে শহরের রাস্তা ঘাট। আয়োজকরা জানান, গেল ১৫ দিন ধরে চলছে নানা ধরনের প্রস্তুতি ও সাজ সজ্জার কাজ।
এরআগে ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি তুলে ধরতে শহরের রেল রোডস্থ জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এর আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকু।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান হাবিবুর রহমান, সরদার ফখরুল আলম সাহেব, সাংগঠনিক সম্পাদক নকিব নজিবুল হকসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
সম্মেলন ঘিরে জেলাজুড়ে সাজ সাজ রব থাকলেও দলটি’র শীর্ষ নেতৃত্বে কোন পরিবর্তন আসছে না বলে আভাস মিলেছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, পুরানোতেই আস্থা রাখছেন দলের নীতি নির্ধারকেরা। তাই সম্মেলনে ভোটাভুটির প্রশ্ন অমূলক। তবে দলীয় নেতারা বলছেন, নেতৃত্ব নেওয়ার যগ্যতা অনেকেরই আছে। জ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা থাকার কারণে কেউ পদ চাইছে না বা প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন না।
গত তিন দশক ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন ডা. মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বাগেরহাট-৪ আসনের সাংসদ। আর প্রায় দুই দশক ধরে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন শেখ কামরুজ্জামান টুকু। যিনি বাগেরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের সম্মেলনকে ঘিরে দলকে সুসংগঠিত করতে গত জুলাই মাস থেকে জেলার প্রায় সাত শতাধিক ইউনিটকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেন দলের শীর্ষ নেতারা। জেলা ৭৫টি ইউনিয়নের মধ্যে মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা বাদে ৬৮টি ইউনিট ও নয় উপজেলার নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা শেষ হয় নভেম্বরের ২৮ তারিখে।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, তৃণমূলের (ওয়ার্ড পর্যায়ের) ৬০-৭০ ভাগ নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয় সরাসরি ভোটের মাধ্যমে। তবে জেলার ৯ উপজেলার কমিটি নির্বাচনে কোনটিরই ভোটাভুটি হয়নি। সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করা হয়। যেখানে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে অধিকাংশেই সাবেক বহাল।
সম্মেলনের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পিযুষ ভট্টাচার্ষ্য। প্রধান অতিথি করা হয়েছ দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও বাগেরহাট ও খুলনার স্থানীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
শেখ কামরুজ্জামান টুকু বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা দারুণ উজ্জীবিত। এবারের সম্মেলনে জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তৃণমূলকে ঢেলে সাজিয়েছে। গত প্রায় পাঁচ মাস ধরে দলের নেতারা তৃণমূলে নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন। যা এর আগে একই সময়ে কখনও হয়নি।
সম্মেলনে ১২ থেকে ১৪ হাজার ডেলিগেট উপস্থিত থাকবে। সিনিয়রদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এখন পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীরা পুরানো কমিটি বহাল থাকার পক্ষে বলে মতামত দিচ্ছেন।
এজি/আইএইচ/বিআই/৮ ডিসেম্বর, ২০১৯