নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
মাদকাসক্ত ছেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন মাকে। হত্যার পর নিজের কক্ষেই শুয়ে ছিলেন তিনি। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
রোববার (২০ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে বাগেরহাট শহরের পূর্ব বাসাবাটি এলাকার পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মায়ের নাম রাবেয়া মল্লিক (৬৫)। তাঁর স্বামীর নাম শাহজাহান মোল্লা। গ্রেপ্তার রাসেল মোল্লা ওরফে শুকুর (৩৫) দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত বলে পুলিশ ও পরিবার জানিয়েছে।
পূর্ব বাসাবাটি এলাকায় বাবা প্রয়াত উকিল উদ্দিন মল্লিকের বাড়িতে ওই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন রাবেয়া।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি জব্দ করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।নিজ
পুলিশ বলছে, নিহত ওই নারীর মূখমন্ডল, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারারো অস্ত্রের অন্তত ১৫টি আঘাতের ক্ষত রয়েছে। নতুন একটি মোবাইল ফোনসেট চেয়ে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ছেলে মাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ আবজাল সাংবাদিকদের বলেন, রাসেল নামের ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। তিনি তাঁর মায়ের কাছে নতুন মোবাইল ফোনসেট চেয়েছিলেন। তা না পেয়ে নেশাগ্রস্ত ছেলে ক্ষুব্ধ হয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাঁর মাকে জখম করে।
‘রাসেল মায়ের কাছে নেশার টাকা অথবা মোবাইল ফোনসেট চেয়ে না পেয়ে হত্যা করে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।’
রাবেয়ার মুখমণ্ডল ও গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরির আঘাতের চিহ্ন আছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের মেয়ে নাজমা আক্তার বলেন, ‘আমার মা রাবেয়া ও ছোট ভাই রাসেল দোতলা বাড়িতে বসবাস করতেন। মা থাকতেন নিচতলায় আর ভাই দোতলায়। আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আমি মাকে ফোন করি। মায়ের সঙ্গে এটাই ছিল আমার শেষ কথা। এরপর শুনি মা খুন হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছোট ভাই রাসেল স্কুলে পড়ার সময় থেকে খারাপ বন্ধুদের সঙ্গে মিশে নেশায় আসক্ত হন। তাঁকে বেশ কয়েকবার আমরা চিকিৎসা করিয়েছি। চিকিৎসার পর কিছুদিন স্বাভাবিক থাকে। পরে আবার যা তাই।’
২০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি মাদকাসক্ত। তাঁর নেশার টাকার জোগান দিতে দিতে পরিবারের সবাই ছিল অতিষ্ঠ। টাকা না পেলেই মাকে মারধর করতেন। গত প্রায় ৭-৮ মাস তাঁর মা ছেলের ভয়ে সব সময় ঘরে দরজা আটকে থাকতেন।
নিহত রাবেয়া মল্লিকের বাড়ির অন্য একটি ঘরে ভাড়া থাকতেন গ্যারেজ মালিক সুলতান খাঁ। তিনি বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, রাসেল দীর্ঘদিন ধরে নেশাগ্রস্থ। মাঝে মাঝে সে বাড়িতে মায়ের সাথে ঝগড়া, এমনি মারধর করত। রাসেলরা চার বোন ও এক ভাই। বোনরা সবাই স্বামীর বাড়িতে থাকেন। এখানে এই বাড়ি কেবল মা আর এই ছেলে থাকতেন।
এসএইচ/এসআই/বিআই/২০ অক্টোবর, ২০১৯