নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
নেতাদের মধ্যে পদ-পদবীর অভ্যন্তরীণ বিরোধ বাড়তে বাড়তে প্রকাশ্য হয়েছে বেশ আগেই। দলীয় নানা অনুষ্ঠান পৃথকভাবে পালন হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরেই। এবার দলের ৪১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিও পৃথক ভাবে পালন করলো বাগেরহাট জেলা বিএনপির দুটি গ্রুপ।
জেলা কমিটির পর দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল এবং যুবদলের কমিটি হবার পর থেকে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিও হয়েছে বেশ। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মাঝেই গেল জাতীয় নির্বাচনের আগে জোরালো হয় জেলার নেতাদের বিরোধে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিষ্ঠার পর বিএনপি এখন সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। দলীয় প্রধান কারাগারে, আন্দোলনে সুবিধা করতে না পারা, নির্বাচনে ভরাডুবি, নতুন-পুরোনো জোটে অসন্তোষ, অঙ্গসংগঠনগুলোয় অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং দলের নেতাদের মতপার্থক্য প্রায়ই সামনে চলে আসছে। সব মিলিয়ে বিএনপি অনেকটাই কোণঠাসা।
সেই পরিস্থিতিতে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বাগেরহাটে আলাদা আলাদা আয়োজনে বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে জেলার নেতারা।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির ব্যানারে এদিন সকালে শহরের সরুই এলাকার দলীয় কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হয়। অন্যদিকে অন্যদিকে জেলা যুবদলের ব্যানারে শহরের একটি রেস্তরায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা, দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন জেলা বিএনপির বেশ কিছু নেতা।
দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম। সেখানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সিনিয়ার সহ-সভাপতি শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, সাধারন সম্পাদক আলী রেজা বাবু, মোংলা পৌরসভা মেয়র ও সভাপতি জুলফিকার আলী, সহ-সভাপতি এসকেন্দ্র হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাফ্ফর রহমান আলম, মেহেবুবুল হক কিশোর, কৃষক দলের সভাপতি সৈয়দ আসাফুদৌলা জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান খাঁন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক আলী দীপ প্রমুখ।
এদিকে শহরের ক্যাসেল আশারা নামের একটি রেস্তোরাঁয় জেলা যুবদলে ব্যানারে জেলা বিএনপির অন্য একটি অংশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন। পরে দোয়া ও আলোচনা সভা করে।
এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা সৈয়দ নাসির আহম্মেদ মালেক, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম গোরা, জেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক মো. সুজন মোল্লা, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি সরদার লিয়াকাত আলী, ব্যারিস্টার জাকির হোসেন প্রমুখ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীও এমন পৃথকভাবে দু:খজনক বলছেন অনেক নেতা। তবে তাঁরা এও বলছেন, এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দীর্ঘদিনে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে জেলায় দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে অনাস্থা আরও বাড়বে। তাই দ্রুত এই অবস্থা নিরসনে দুই পক্ষকেই আহ্বান সাধারণ কর্মীদের।
এদিকে জেলা বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘদিনেই এই সংকট ও অনাস্থার পরিবেশ নিরসনের সুযোগ থাকলেও তা হচ্ছেনা। কারণ দু’পক্ষের মাঝেই দোষারোপ ও ছাড় না দেওয়ার মানুসিকতা এখন প্রায় ‘ইগোর’ পর্যায় পৌছেছে। সেই সাথে কেন্দ্রিয় নেতাদের এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল আচারণ এবং উদ্যোগী না হওয়া সংকট আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পৃথক আয়োজন থেকেই বিএনপি নেতারা দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করেন এবং কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি জানান।
এসএইচ/এসআই/বিআই/০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬