উপজেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ওয়ার্ডের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক বৃদ্ধ রোগী আহত হয়েছেন।
শনিবার (২৪ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত আবদুল মান্নান মীরের (৮৪) বাড়ি কচুয়া উপজেলা সদরে। গত বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে তিনি এই হাসপাতালে ভর্তি হন।
ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ার খবর পেয়ে রোববার (২৫ আগস্ট) কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছেন গণপূর্ত ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ওই ভবনে আর স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা না করার সুপারিশ করেছে।
কচুয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. বেলফার হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আবদুল মান্নান গতকাল রাতে পুরুষ ওয়ার্ডে তাঁর নির্ধারিত শয্যায় ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ করে তাঁর গায়ের ওপর ছাদের পলেস্তারার কিছু অংশ খসে পড়ে। মশারি টানানো থাকায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা হয়।
ছাদের খসে পড়া কংক্রিটের আঘাতে তিনি মাথা, বুক ও হাতে আঘাত পান। পরে তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত।
হাসপাতালের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সত্তরের দশকে নির্মিত হাসপাতালের এই পুরাতন ভবনটিতে ৫০ শয্যার পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড আছে। দীর্ঘদিন ধরেই ভবনের জীর্ণ অবস্থা। বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানের পর বছর দুই আগে দ্বিতীয় তলার ছাদের ওপর একটি জলছাদ করে সংস্কার করা হয়। কিন্তু তারপর আর কোনো কাজ হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার পর নির্মিত নতুন ভবনটিতে হাসপাতালের বহির্বিভাগ, ল্যাব, অপারেশন থিয়েটার ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভর্তি রোগীদের চিকিৎসাসেবা চলে পুরতন দ্বিতল ভবনটিতেই।
ভর্তি রোগীদের সেবা দিতে বিকল্প কোন ভবন না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তিপক্ষের।
ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রোববার সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার শিয়ালকাঠী গ্রামের ফেতেমা বেগম বলেন, ক’দিন আগে আমার ভাবি এখানের নারী ওয়ার্ডে তিনদিন ভর্তি ছিলেন। সেই সময় একদিন ছাদ থেকে চুন-বালি খসে পড়ে। মাঝে মাঝেই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ ও হাসপাতালের চিকিৎসক সংকট নিরসনের জানান তিনি।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জিকেএম শামসুজ্জামান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ভবনটি আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত ছিলনা। রাতের ওই দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর আমরা বিষয়টি গণপূর্ত ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানালে তাঁরা পরিদর্শনের পর ভবনটির ঝঁকিপূর্ণ ঘোষনা করেছেন এবং ব্যবহার না করার সুপারিশ করেছেন।
আমরা ভবনটি ব্যবহার না করে কিভাবে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমে চালিয়ে নেওয়া যায় সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছি।
এসএইচ//এসআই/বিআই/২৫ আগস্ট ২০১৯