নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান বাবুকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে পটুয়াখালীর দুমকি থানার লেবুখালী এলাকা থেকে স্থানীয় থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
দুমকি থানা পুলিশ বলছে, কুয়াকাটা থেকে একটি প্রাইভেটকার যোগে পায়রা সেতুর টোলপ্লাজা অতিক্রম করার সময় টহল পুলিশ মদ্যপ অবস্থায় মেহেদীকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে বাগেরহাটের কচুয়া থানায় হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৩টি মামলা রয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার ‘হাজত’খানা থেকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভে আসেন মেহেদী হাসান বাবু। এর কিছু আগে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আল্লাহ ভরসা,, আমি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছি। সকলে দোয়া করেন। আপনাদের দোয়া থাকলে আবার দেখা হবে।’
ফেসবুক লাইভে তিনি দাবি করেন, ৫টি গাড়িতে তাকে ধাওয়া করে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার নিয়ে যাওয়া হয়। রক্তমাখা শার্ট দেখিয়ে তারা তাকে মারধর করেছে বলেও উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘কতদিন জেলে রাখবে, জেল থেকে বেরনোর পরে, তোরা যারা আমাকে ধরালি, পরিবারের কাছ থেকে। তোদের রক্ষা নেই আর। ……. আমি বাবু, মরার আগে ভয় পাইনা। দেখিস না হাজতে বসে লাইভ করি। এই দ্যাখ মাইরের রক্ত শুকায় নাই। এই রক্ত শুকাবে না।’
ওই লাইভে নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক দাবি করে ‘বিএনপির সন্ত্রাসীদের নির্মূল’ করার কথাও বলেন শোনা যায় তাকে। বিএনপির কয়েক নেতার নাম উল্লেখ করে তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি এ সময় নিজের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
অবশ্য কিছু পরে ফেসবুক থেকে মেহেদী হাসান বাবুর ওই লাইভ এবং স্ট্যাটাস মুছে যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তাঁর ব্যবহৃত ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিও আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
কচুয়া বিএনপির একটি সূত্র বলছে, গেল ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মেহেদী হাসান বাবুসহ আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ নেতারা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। তবে বাবু মাঝে মাঝেই তার ফেসবুক থেকে বিভিন্ন অজ্ঞাত স্থান থেকে লাইভে আসতেন এবং নানা ধরণের কথা বলতেন। সাম্প্রতি তিনি পটুয়াখালী শহর, কলাপাড়া ও কুয়াকাটায় আত্মগোপনে ছিলেন বলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানতে পারে। গত বুধবার সন্ধ্যায় তিনি পরিবারের সদস্যদের কুয়াকাটা সৈকতে ঘোরে বেড়ানোর লাইভ দেন। ওই লাইভ দেখে বাগেরহাট থেকে কুয়াকাটার বিএনপি নেতাকর্মীদের জানানো হয়।
অপর একটি সূত্র বলছে, কচুয়া থেকেও বেশকিছু নেতাকর্মী বাবুকে ধরতে কুয়াকাটা ছিলেন। কুয়াকাটা এবং এখান থেকে যাওয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিলে পরিবারের সবাইকে রেখে মেহেদী হাসান বাবু মদ্যপ অবস্থায় দ্রুত বেগে বরিশালের দিকে পালানোর চেষ্টা করেন।
পথে পায়রা সেতুর রোড ডিভাইডারে আটকে গেলে টোল কর্তৃপক্ষ তাকে পুলিশে দেয়। এ সময় কিছু ব্যক্তি ওই গাড়ি ভাঙচুরও করে।
বাগেরহাটের কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল আলম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পটুয়াখালী থেকে তাকে কচুয়া থানায় আনা হচ্ছে। গ্রেপ্তার মেহেদীর বিরুদ্ধে আমার থানায় হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৩টি মামলা রয়েছে।
এসআই/আইএইচ/বিআই/২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪