স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে
এক চিকিৎসককে মারধর করেছে
রোগীর স্বজন।
ঘটনার পর জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ ইমরান মোহাম্মদকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে এক রোগীর দুই স্বজনের বিরুদ্ধে।
রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের গেটে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রাতেই দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় মারধরের শিকার ওই চিকিৎসক বাদী হয়ে দুজনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে বাগেরহাট মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলার পর গতকাল সোমবার সকালে পুলিশ গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বাগেরহাট পৌরসভার খারদ্বার এলাকার লিয়াকত খানের ছেলে মিলন খান (৩৯) ও হাড়িখালী এলাকার সরোয়ার হোসেনের ছেলে মাসুম বিল্লাহ (৪৫)।
মিলন খানের স্ত্রী সেলিনা পারভীন চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁর স্বামী ও ভাইয়ের ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে ঘটনার পর হাসপাতালের লোকজন ওয়ার্ডে তাঁর স্বামী, ননদ ও ভাইকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
স্বামী ও ভাইকে পুলিশ যেমন আটক করেছে, তেমনি তিনিও তাঁর স্বামী ও ভাইকে যাঁরা মারধর করেছেন, তাঁদের বিচারের দাবি করেন।
এদিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইমরানকে মারধরের খবর পেয়ে রাতেই সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন জি কে এম সামসুজ্জামান ছুটে যান। চিকিৎসককে মারধরের খবর সহকর্মী চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা এ ঘটনার নিন্দা ও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
জানা গেছে, শহরের খারদ্বার এলাকার বাসিন্দা মিলন খানের আড়াই মাস বয়সী শিশু সোলায়মান খানের শ্বাসকষ্ট বাড়লে রোববার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মিলন খান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর ছেলের চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। মিলন খান তাঁর ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করে বোন আঁখি, শ্যালক মাসুম বিল্লাহকে নিয়ে হাসপাতালের বাইরে যাচ্ছিলেন। এ সময় জরুরি বিভাগের সামনে গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় চিকিৎসক শেখ ইমরান মোহাম্মদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ ইমরান মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, রাত আটটার দিকে হাসপাতালে কর্তব্য শেষ করে অন্য আরেকজনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বাসায় ফেরার উদ্দেশে জরুরি বিভাগের গেটের সামনে যান তিনি। গেটে ঢোকার সময় হাসপাতালে ভর্তি এক শিশু রোগীর দুজন স্বজনের তাঁর সামান্য ধাক্কা লাগে।
এ সময় হাসপাতালের কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ওই রোগীর স্বজনদের তাঁর পরিচয় বললে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে গালাগাল করেন। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁরা চাড়াও হয়ে তাঁকে চড়থাপ্পড় ও লাথি মারেন।
রোগীর স্বজনদের মারধর করার অভিযোগ অস্বীকার করে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন জি কে এম সামসুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। হাসপাতালে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটুক, তা আমরা চাই না।’
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাতাব উদ্দিন বলেন, চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগ পেয়ে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এইচ//এসআই/বিআই/০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯