স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির ৬ প্রার্থীসহ জামায়াত, কমিউনিস্ট পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ২৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
বুধবার (২৮ নভেম্বর) বাগেরহাটের জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন উপজেলায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে তাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এরআগে মঙ্গলবার জেলার ৪ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন দলের মোট ২৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা তপন কুমার বিশ্বাস।
বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বাগেরহাট-২ আসনে থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এম এ সালাম। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতি। মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশে নেই। প্রতিদিনই বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ রেইড দিচ্ছে। সরকারদলীয় লোকজন বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলছে, নেতাকর্মী ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। সবােই আত্মঙ্কের মধ্যে আছে।’
‘এমন পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দূরহ’ অভিযোগ করে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলন তিনি। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জয়ের আশাবাদ জানিয়ে বাগেরহাটের উন্নয়নের প্রতিশ্রুত দেন সালাম। এই আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিমও দলের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
জমা পড়া ২৯টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লাহাট ও চিতলমারী) আসনে ৬ জন, বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর ও কচুয়া) আসনে ৯ জন, বাগেরহাট-৩ (রামপাল ও মোংলা) আসনে ৬ জন এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা) আসনে ৮ জন মনোনয়নপত্র দালিখ করেছেন।
বাগেরহাট-১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই এবং বর্তমান সাংসদ শেখ হেলাল উদ্দীন, বিএনপি থেকে দলের জেলা কমিটির উপদেষ্টা শেখ মুজিবর রহমান ও সহসভাপতি প্রকৌশলী মাসুদ রানা, ইসলামী আন্দোলনের মো. লিয়াকত আলী শেখ, জাতীয় পার্টির এস এম আল জোবায়ের, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের এম ডি শামসুল হক।
বাগেরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগে শেখ হেলালের ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়, বিএনপির এম এ সালাম ও এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম, সিপিবির সেকেন্দার আলী, ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, জাকের পার্টির খান আরিফুর রহমান এবং স্বতস্ত্র প্রার্থী এস এম আজমল হেসেন ও রেজাউর রহমান মন্টু।
বাগেরহাট-৩ (রামপাল ও মোংলা) আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ হাবিবুন নাহার, জেলা বিএনপির সহসভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম, জামায়াতের আব্দুল ওয়াদুদ, ইসলামী আন্দোলনের মাও. শাহজালাল সিরাজী, জাকের পার্টির মো. রেজাউল শেখ, জাতীয় পার্টির মো. সেকেন্দার আলী মনি।
বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা) আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ ডা. মোজাম্মেল হোসেন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি কাজী খায়রুজ্জামান শিপন, জামায়াতের আবদুল আলীম, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) সোমনাথ দে, সিপিবির শরিফুজ্জামান শরিফ, ইসলামী আন্দোলনের অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনফ) মো. রিয়াদুল ইসলাম আফজাল ও ন্যাশনালস পিপলস পার্টির (এএনপি) মো. আমিনুল ইসলাম খান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মনোনয়নপত্র জামা দিতে এসে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশে না থাকার অভিযোগ করেছে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র্র জমা দেওয়া জামায়াতের দুই প্রার্থীও।
বাগেরহাট-৩ আসনের মনোনয়ন জমা দেওয়া জামায়াতের জেলা নায়েবে আমির আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ নেই। রামপাল, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলাসহ বিভিন্নস্থানে নেতাকর্মীদের উপর হামলা মামলা হচ্ছে। গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বুধবারও মোরেলগঞ্জ থানার একটি গায়েবি মামলায় হাজির হয়ে আদালতে জামিন নিতে আসা তাদের ১৫ জন নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এইচ//এসআই/বিআই/২৮ নভেম্বর, ২০১৮