স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় ইউনুস আলী চৌকিদার (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এসময় বাসের চার যাত্রীও কমবেশি আহত হন। নিহত ইউনুস ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালাতেন।
শনিবার (১৮ আগস্ট) সকালে উপজেলায় রাজৈর বাসস্ট্যাণ্ডের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস সড়েকর পাশে থাকা ওই ইজিবাইক চালককে চাপা দেয়।
নিহত ইউনুস আলী চৌকিদার শরণখোলা উপজেলার রাজৈর গ্রামের মোবারক চৌকিদারের ছেলে।
আহত আবুল হাসান, জাকির হোসেন, বলরাম কীর্তনিয়া ও সুকুমার সিকদারকে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
প্রতক্ষদার্শীরা জানান, ইউনুস রাজৈর বাসস্ট্যাণ্ডে সড়কের পাশে ইাজবাইক রেখে পানি দিয়ে সেটি পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় যাত্রীবাহী বাসটি এসে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর স্থানীয় উত্তেজিত জনতা বেশ কিছুক্ষণ মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা সড়কটি অবরোধ করে রাখে। এ সময় বিক্ষুব্দরা বাসটি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নেভায়।
নিহতের পরিবার বলছে, এটি দুর্ঘটনা নয়। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় নিহত ইউনুসের ভাই শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে বাসের চালক ও মালিক শহিদুল ইসলামের নামে শরণখোলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। শহিদুল জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার কালিকাবাড়ি এলাকার জব্বার খানের ছেলে।
নিহতের ভাই নজরুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, এক সপ্তাহ আগে ইজিবাইকে যাত্রী তোলা নিয়ে ইউনুসের সঙ্গে বাসচালক শহিদুলের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সেদিন হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরে বিষয়টি খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার (ইউপি সদস্য) জাহাঙ্গীর হোসেনসহ স্থানীয়রা বসে মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। ওই সময় ক্ষুব্ধ ওই বাস চালক ইউনুসকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়েছিল।
ওই ঘটনার জেরে পরিকল্পিতভাবে বাস চাপা দিয়ে ইউনুসকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
ফায়ার সার্ভিসের শরণখোলা স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা মো. জলিল সিকদার বলেন, মোরেলগঞ্জ থেকে শরণখোলার তাফালবাড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী বাস ওই এলাকায় পৌছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ইজিবাইক চালক ইউনুস আলীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসময় বাসের চারজন যাত্রীও আহত হয়েছেন।
ওই জিবাইক চালক তার গাড়ীটি রাস্তার পাশের একটি পুকুরের পানি দিয়ে ধোয়া মোছা করছিলেন। তিনি মোরেলগঞ্জ-তাফালবাড়ি সড়কে ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী এসে বাসটিতে আগুন দিয়ে ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নেভায়। আগুনে বাসটির আংশিক পুড়ে গেছে বলে জানান তিনি।
দুর্ঘটনার পর পুলিশ বাসটি (ঢাকা চ- ৯৩০) আটক করলেও চালক এবং তার সহকারি পালিয়ে গেছে।
শরণখোলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজুর রহমান শেখ বলেন, ঘটনার পর সড়কে কিছু সময় যান চলাচল বন্ধ থাকলেও পরে স্বাভাবিক হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। বাস চালক ও তার সহকারীকে আটকের চেষ্টা চলছে।
এইচ//এসআই/বিআই/১৮ আগস্ট ২০১৮