স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
সাড়ে ১৭ টন তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) নিয়ে দুর্ঘটনায় পড়া ট্যাংকারবাহী লরিটি প্রায় ১৫ ঘন্টা পর উদ্ধার হয়েছে।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সোনাতুনিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় খুলনা-মোংলা মহাসড়কে শুক্রবার দিনগত রাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ট্যাংকারবাহী যমুনা গ্যাসের ওই লরিটি। দুর্ঘটনার পর ট্যাংক থেকে গ্যাস লিকেজ শুরু হলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আশপাশের এলাকায় মাইকিং করে লোকজনকে কোনো ধরনের আগুন না জ্বালাতে সতর্ক করেছে প্রশাসন। দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের বাগেরহাট, মোংলা ইপিজেড ও খুলনার চারটি ইউনিয়ন ঘটনাস্থল ঘিরে সতর্ক অবস্থান নেয়।
এলপিজি নিয়ে লরিটি যুমুনা গ্যাসের মোংলা প্ল্যান্ট থেকে বগুড়া প্ল্যান্টে যাচ্ছিল।
দুপুরে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গ্যাসবাহী ট্যাংকলরিটি সড়কের পাশে পড়ে আছে। ট্যাংকলরিটি থেকে গ্যাস বের হচ্ছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে কাউকে যেতে দিচ্ছেন না। বন্ধ রাখা হয় ওই এলাকার দোকান পাট। এক পাশ দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ভাবে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করছে হাইওয়ে পুলিশ। অবশ্য বিকেল সোয়া ৫টার কোন দুর্ঘটনা ছাড়ই লরিটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবুল হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘আমরা সকাল ছয়টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তখন লরির ট্যাংক থেকে গ্যাস বের হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে ফোম ও বালু দিয়ে গ্যাস বের হওয়া বন্ধের চেষ্টা করা হয়ে। তবে গ্যাস বের হওয়া পুরোপুরি বন্ধ করা না যাওয়ায় আশপাশে সবাইকে আগুন না জ্বালাতে সতর্ক করা হয়।
বিকাল চারটার পর মোংলা বন্দর থেকে ক্রেন এনে উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়। প্রায় এক ঘন্টা শ্বাসরুদ্ধকর চেষ্টার পর কোন ধরণের দুর্ঘটনা ছাড়াই নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয় ট্যাংকটি।
যমুনা গ্যাসের মোংলা প্লান্ট ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, লরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার বামপাশে কাত হয়ে উল্টে যায়। এরপর থেকে লিক হয়ে গ্যাস বের হতে থাকলে। ট্যাংকের লক সিলটি মটির নিচে আটকে গেলে তা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তবে উদ্ধারের পর বিকালে নিরাপদে লকটি বন্ধ করা সম্ভব হয়। পরে অন্য একটি ট্রাক ইঞ্চিনের সাহায্যে ট্যাংকটিকে নিরাপদে মোংলা গ্যাস প্লান্টে নেওয়া হয়।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ১৪ চাপার লরিটি কাট হলে উল্টে যাবার পর থেকে গ্যাস বের হতে শুরু করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন যে কোন প্রকান আগুন না জ্বালাতে সতর্ক করা হয় আশপাশের অধিবাসীদের।
দিনভর উৎকন্ঠার পর বিকালে গ্যাস ভর্তি লরিটি উদ্ধার করে সরিয়ে নেওয়ার পর এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে। মূল উদ্ধার তৎপরত চলার সময় খুলন-মোংলা সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়। অবশ্য ট্যাংকটি সরিয়ে নেওয়ার আধাঘন্টার মধ্যে যান চলাচল আবারও সাভাবিক হয়েছে।
আগুন জ্বালাতে স্থানীয়দের যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল তাও তুলে নেওয়ার কথা জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
এইচ//এসআই/বিআই/০২ জুন ২০১৮