স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগ ওঠার পর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৪ মে) ওই শিক্ষক তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হন।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মনোজ কান্তি মণ্ডল। তিনি সরকারি পিসি কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগের প্রধান। বৃহস্পতিবার তিনি ক্যাম্পাসে এলে শিক্ষার্থীরা তার অপসারণ ও শাস্তি দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় তারা প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিৎ বসুকে তাঁর কার্যালয়েও অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এর আগে ২০ মে বাংলা বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ৪৭ শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের অপসারণ ও শাস্তি চেয়ে অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেন। তাঁরা লিখিত আবেদনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, যৌন হয়রানি, পোশাক নিয়ে বিরূপ মন্তব্য, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সামনে ধূমপান, ধর্ম অবমাননাসহ বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন।
সরকারি পিসি কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিৎ বসু বলেন, ‘বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মনোজ কান্তি মণ্ডল এখানে দুই বছর ধরে কর্মরত আছেন। আমি এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছি আট মাস হলো। ২০ মে শিক্ষার্থীরা আমার কাছে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসে। এর আগে কেউ তার ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পাওয়ার দিন তদন্ত কমিটি গঠন করে ওই শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।’
কলেজের উপাধ্যক্ষ মোস্তাহিদুল আলমকে প্রধান করে গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিকে ২৮ মে’র মধ্যে অধ্যক্ষের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ওই তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দিতে বৃহস্পতিবার কলেজে এসেছিলেন মনোজ কান্তি মণ্ডল।
অধ্যক্ষ বলেন, ‘ওই শিক্ষককে দেখে আকস্মিকভাবে বাংলা বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী আমার কার্যালয়ের সামনে তাঁর শাস্তি দাবি করে বিক্ষোভ করে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা ফিরে যায়।’
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্রণিকক্ষে ছাত্রীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ আচরণের অভিযোগ করেন। বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, ‘তিনি মেয়েদের নিয়ে সব সময় অশ্লীল মন্তব্য করেন। প্রথম বর্ষ থেকেই তিনি আমাদের সাথে এমন ব্যবহার করে আসছে।’
একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর অভিযোগ, রোবকা পরে এলে ক্লাসে ঢুকতে দিতেন না ওই শিক্ষক। ক্লাস চলাকালে মেয়েদের বিভিন্ন বাজে কথা বলেতে।
গেল দুই বছরেও তারা কেন ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করলেন না, এমন প্রশ্নে শিক্ষার্থীরা বলেন, তিনি ক্লাসে মেয়েদের নিয়ে যেসব মন্তব্য করতেন তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। আমরা বাধ্য হয়ে তার শান্তির দাবীতে আন্দোলনে নেমেছি।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে মনোজ কান্তি মণ্ডলের মুঠোফোনে যোগাযো কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এইচ//এসআই/বিআই/২৪ মে ২০১৮