স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নারী চিকিৎসককে শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ঘটনার চার দিন পর রোববার (১৪ মে) সন্ধ্যায় ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুল্লাহ গালিব মামলাটি করেন।
আসামিরা হলেন ফকিরহাট উপজেলার মানসা বাহিরদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির রেজাউল করিম এবং তাঁর সহযোগী আনোয়ার হোসেন। আনোয়ার ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের সাবেক খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার।
তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
গেল ৯ মে স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে চিকিৎসা দিতে দেরি হওয়ার অভিযোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মৌসুমী ইয়াসমিনকে প্রকাশ্যে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে ফকির রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। একই সময় আরেক চিকিৎসক অভিজিৎ মৃধাকে মারধরের অভিযোগ চেয়ারম্যানের সহযোগী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।
মামলার বাদী আসাদুল্লাহ গালিব বলেন, ৯ মে দুপুরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আসেন ঝর্ণা বেগমকে। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৌসুমী ইয়াসমিন অসুস্থ্য ঝর্ণা বেগমকে অক্সিজেন দেন।
“রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া অবস্থায় রেজাউল করিম সেখানে এসে মৌসুমী ইয়াসমিনের গলায় ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং আনোয়ার অভিজিৎকে মারধর করে।”
ওই ঘটনায় প্রজতন্ত্রের কর্মচারীকে হত্যার চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ এনে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে পুলিশকে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ শেখ হেলাল উদ্দীন।
ফকিরহাটের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াংকা পাল বলেন, গতকাল বিকেলে সাংসদ শেখ হেলাল উদ্দিন মারধরের শিকার চিকিৎসকসহ হাসপাতালের সব কর্মকর্তার সঙ্গে সভা করেন। তিনি এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে অভিযুক্ত রেজাউল করিম ও তাঁর সহযোগী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
ফকিরহাট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জগন্নাথ চন্দ্র বলেন, ‘উপপরিদর্শক (এসআই) বিভাস চন্দ্র সাহাকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।’
ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন কুমার দাস বলেন, ‘দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের জন্য ফকির রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
চিকিৎসকদের ওপর হামলার ওই ঘটনায় ১০ মে বাগেরহাট ইনফোতে ‘আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে চিকিৎসককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
তবে অভিযুক্ত রেজাউল করিমের দাবি, তাঁর শ্বাসকষ্টে ভোগা স্ত্রীকে সময়মতো চিকিৎসা দেয়নি ওই চিকিৎসকেরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়েছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ ধামাচাপা দিতে তাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
এইচ//এসআই/বিআই/১৩ মে ২০১৮