স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের শরণখোলায় পারিবারিক কলহে কমলা বেগম ওরফে নূরী (২০) নামে এক গৃহবধূ গায়ে কেরসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
শনিবার (৩ মার্চ) সকালে শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশংকাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আগুনে ওই গৃহবধূর শরীরের প্রায় ৬০ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
পাবিবারিক কলহের জেরে গায়ে আগুন লাগিয়ে ওই নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে পুলিশ।
কমলা বেগম বকুলতলা গ্রামের ইলিয়াস হাওলাদারের স্ত্রী। কমলা বেগমের আরমান নামে প্রায় তিন মাস বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক অসীম কুমার সমাদ্দার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, গৃহবধূ কমলা বেগমের শরীর মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে। তার শরীরের প্রায় ষাটভাগ পুড়ে গেছে। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবিরুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে গৃহবধূ কমলা বেগম ও তার দিনমজুর স্বামী ইলিয়াস শ্বশুড়ি তাসলিমা বেগমের সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। এনিয়ে কমলার স্বামী তাকে প্রায়ই মারধর করত। স্বামীর নিয়মিত নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কমলা ঘরে থাকা কেরসিন সারা গায়ে লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
স্ত্রীর শরীরে আগুন দেখতে পেয়ে ইলিয়াস ছুটে এসে তা নেভানোর চেষ্টা করে। ততক্ষণে গৃহবধূ কমলার অধিকাংশ শরীর ঝলসে যায়। পরে তার স্বামী তাকে উদ্ধার করে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।
তিনি আরও বলেন, গৃহবধূর শরীরে আগুন লাগার খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে যায়। বাবা মা হারা অগ্নিদগ্ধ কমলার চিকিৎসা করানোর সংগতি নেই দেখে পুলিশ সদস্যরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সবাই মিলে প্রায় ১০ হাজার টাকা তুলে মেয়েটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পরিবারের বরাত দিয়ে শরণখোলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম কামরুল ইসলাম বিকেলে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামের প্রয়াত মতলেব হাওলাদারের ছেলে ইলিয়াস হাওলাদার চট্টগ্রামের একটি পোষাক কারখানায় কাজ নেয়।
একই এলাকার ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের প্রয়াত মোক্তার খলিফার মেয়ে বকুল বেগমও জীবিকার তাগিদে চট্টগ্রামে পোষাক কারখানায় কাজ করতে যায়। সেখানে দু’জনের মধ্যে পরিচয়ের সূত্রধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় পনেরো মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক ধরে তারা চট্টগ্রামে বসে বিয়ে করে নেন।
এর কয়েক মাস পরে তারা দুজনে চট্টগাম থেকে এলাকায় ফিরে আসেন। এখানে আসার পর তাদের ঘরে একটি সন্তান হয়। এখানে আসার পর তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। স্বামীর বাড়ির লোকজনের মারধর সহ্য না করতে পেরে কমলা বেগম আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
এইচ//এসআই/বিআই/০৯ মার্চ, ২০১৮