স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার জেলে-বাওয়ালীদের জন্য বিকল্প কাজের সুযোগ সৃষ্টি না করেই বনের শরণখোলা রেঞ্জের অধিকাংশ এলাকা অভয়ারণ্য ঘোষণা ও বনজ সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বন সংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ভোলা নদীর মোহনায় স্থানীয় খুড়িয়াখালী বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন শেষে স্থানীয় জেলে-বাওয়ালীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সাম্প্রতি সুন্দরবন সুরক্ষায় বনের বেশ কয়েকটি এলাকাকে নতুন করে অভয়ারণ্য ঘোষণা করে সরকার।
জেলা বাওয়ালীরা বলছেন, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের ৯৮ ভাগ এলাকাই এখন অভয়ারণ্যের আওতাভূক্ত। ওই এলাকার নদী-খালে মাছ শিকার বা থেকে কোন প্রাকারের সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ। এর ফলে তারা দীর্ঘদিনের পেশা হারাচ্ছেন। ফলে হটাৎ করেই কর্মসংস্থান হারাচ্ছেন বনের উপর নির্ভশীল স্থানীয় বাসীন্দারা।
তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, সমগ্র সুন্দরবনের সকল রেঞ্জে সমহারে অভয়ারণ্য ঘোষনা, শরণখোলা রেঞ্জের জেলে বাওয়ালীদের পেশা ও জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করা ও এই রেঞ্জের ৯৮ শতাংশ অভয়ারণ্য কমিয়ে ৫০ শতাংশ করা।
এই দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কয়েক শত জেলে-বাওয়ালীরা তাদের নৌকা-জাল নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
এসময়ে বক্তারা বলেন, বংশগত ভাবেই আমরা সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। বনের উপর জীবীকা। হঠাৎ করে বনে মাছ, কাকড়াসহ সব ধরণের সম্পদ আহরণ বন্ধ করে দিলে আমরা চরম বিপদে পড়বো।
তারা বলেন, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা উপজেলা ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া, পাথরঘাটা ও পিরপোজপুর সদর উপজেলার ১৫ হাজার পরিবারে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জীবন- জীবিকা সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। এ বছরের ১৩ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয় শরণখোলা রেঞ্জের ৯৮ শতাংশ বনভুমি অভয়ারন্য ঘোষনা করে। তাদের বনজীবিরা নিশ্চিত না করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই ওই সিদ্ধান্তের পূর্ণবিবেচনার দাবি জানান তারা।
তা না হলে এখানকার মানুষকে কাজের জন্য এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিতে হবে।
এসময়ে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন, জেলে ডালিম হাওলাদার, পান্না আকন, রফিুকুল ইসলাম কালাম প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে জেলেদের পক্ষ থেকে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, অভয়ারণ্য ঘোষনার বিষয়টি মাত্র গেজেট হয়েছে। এটি এখনো বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। এজন্য সরকার সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জেলে-বাওয়ালীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ইতিমধ্যে প্রটেকশন অফ দা ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এটি অনুমোদন হলে বনজীবিদের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এজি//এসআই/বিআই/২১ নভেম্বর, ২০১৭