অলীপ ঘটক, চিফ নিউজ এডিটর | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
‘শারদ প্রভাতে বাজে তোমার আগমনী, ঢাকের তালে, শঙ্খের সুরে, উলুরধ্বনিতে, সমৃদ্ধির সুবাতাসে ভরে যে ধরণী’- হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয়উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বাকি আর মাত্র দুুই সপ্তাহ।
শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে ধূপ ধনুচি আর ঢাকের তালে সারাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেতে উঠবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা বাগেরহাটও।
এ উপলক্ষে বাগেরহাটের পূজা মণ্ডপগুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরি আর সাজ-সজ্জার শেষ মুহূর্তের কাজ।এবছর জেলার ৬০৫টি পূজা মণ্ডপে হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। অধিকাংশ মণ্ডপে এরই মধ্যে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির জন্য মাটির কাজ। প্রতিমা শিল্পীরা এখন ব্যস্ত দেবী প্রতিমায় রঙ তুলির আঁচর দিতে।
গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবছরও জেলার বৃহৎ আয়োজন বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের সিকদারবাড়িতে। গত বছরের চেয়ে আরও অর্ধশত বাড়িয়ে ৬৫১টি প্রতিমা দিয়ে দুর্গোৎসব আয়োজন করা হয়েছে এই মণ্ডপে।
গত সাত বছর ধরে লিটন সিকদার নামে এক ব্যবসায়ী এই দূর্গাপূজার আয়োজন করে আসছেন।
লিটন সিকদারের দাবি, ‘প্রতিমার সংখ্যার দিক দিয়ে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পূজামণ্ডপ। গত বছর এখানে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয় ৬০১টি প্রতিমা দিয়ে। এ বছর থাকছে ৬৫১টি।’
তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে আমি দূর্গাপূজার আয়োজন করে আসছি। প্রথম বছরে ২০১টি প্রতিমা দিয়ে শুরু হয়। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন স্থানসহ দেশের বাইরের দর্শনার্থীরা দূর্গাপূজা দেখতে এখানে আসে। আশা করছি এবছরও তার ব্যতিক্রম হবে না।
আসছে ১৯ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে সূচনা হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের। এবছর দেবীদূর্গা আসবেন নৌকায় চড়ে, আর যাবেন ঘোড়ায় চড়ে। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর চলবে দূর্গাপূজা চলবে।
ভাষ্কর মিলন বাছাড় বলেন, রামায়ণ ও মহাভারতের দেবদেবীর নানা কাহিনি অবলম্বনে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ মাস ধরে ১৫ জন কারিগর কাজ করছেন।
‘শেষ সময়ে রং তুলির কাজ চলছে পুরোদমে। এখন আমাদের দম ফেলার সময় নেই।’
স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, সিকদারবাড়ির এমন দূর্গাপূজা আয়োজনে আমরা দারুণ খুশি। দূর্গোৎসবে এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলিত হয়।
হাকিমপুর এছাড়াও বাগেরহাট সদরের কাড়াপাড়া রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের সার্বজনীন পূজা মন্দির, চুলকাঠি বাজারের বণিকপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, পোলঘাট সার্বজনীন পূজা মন্দির এবং ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা মমতলা সার্বজনীন পূজা মন্ডগুলোতে বেশি সংখ্যক প্রতিমা তৈরির প্রতিযোগিতা চলছে।
বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লিটন সরকার বলেন, জেলার নয় উপজেলায় এবছর ছয় শতাধিক মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছরের মত এবছরও জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হবে সব আয়োজন।
উৎসবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, জেলায় এ বছর ৬০৫টি মণ্ডপে শারদীয় দূর্গাাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে বাগেরহাটে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে দূর্গোৎসব শেষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে পুলিশের।
এজি//এসআই/বিআই/১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭