স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকির ফহম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাটি মিথ্যা বলে দাবি করেছে তার পরিবার।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা এই মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী শাহানুর বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। তিনি গত নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাস দমনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ কারণে এলাকার একটি কুচক্রী মহল তাঁর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে আসছে। এরই অংশ হিসেবে ওই নারী তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা করেছেন। আমি ওই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’
স্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করলেও বাগেরহাট থানায় মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপণে রয়েছেন ওই চেয়ারম্যান ও তার সহযোগিরা।
গত ৩০ আগস্ট রাতে সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের একটি বাগানে নিয়ে এক তরুণীকে (২৪) চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই রাতেই পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরদিন বাগেরহাট মডেল থানায় ইউপি চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন ওই তরুণীর বড় বোন।
চেয়ারম্যানের স্ত্রীর করা সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, রাজনৈতিক দলের প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করে চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের নামে ওই মামলা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহাদাৎ হোসেন তরুণী ধর্ষণের ঘটনা তদন্ত শুরু করেছেন। তিনি খানপুর ইউনিয়নের রনজিতপুর ও উত্তর খানপুর গ্রামের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি গ্রামবাসীর স্বাক্ষ্য নেন।
তবে পুলিশ এখনও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
ওই তরুণী এখনও বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অপরদিকে, আওয়ামীলীগ নেতা ও দলীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হলেও তার বিরুদ্ধে দল এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খানপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগ ও কৃষকলীগের একাধিক নেতা বলেন, ‘ফকির ফহম উদ্দিনের মতের বিপক্ষে গেলেই সে নেতা ভাল না। তিনি নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। সম্প্রতি এক নারীকে দিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করিয়েছেন। তাতের অন্তত তিনজন বাগেরহাট কারাগারে আটক রয়েছেন।
জানতে চাইলে বাগেরহাট-৪ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, খানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিনের ব্যক্তিগত অপকর্মের দায়ভার দল নেবে না। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হওয়ায় দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ওই তরুণী এখনো সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগীরা পলাতক। তবে তাঁদের খুব শিগগির গ্রেপ্তার করা হবে।
এজি//এসআই/বিআই/০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭