স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে কেনাকাটায় মন্দা থাকলেও ১৭ রোজার পর থেকে জমে উঠতে শুরু করেছে বাগেরহাটের ঈদবাজার। তবে ব্যবসায়ীরা বললেন, আশানুরূপ বিক্রি নেই। আর বাড়তি দামে হতাশায় সাধারণ ক্রেতারা।
বিক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি ভালো নয়। ১৬ রোজা পর্যন্ত তেমন কোনো বিক্রিই হয়নি। এখন কিছু ক্রেতা আসছেন। বেতন-বোনাস পেলে ২২-২৩ রমজানের পর বেচাবিক্রি কিছুটা বাড়তে পারে।
এদিকে সব ধরনের পণ্যের মূল্য এবার বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা অনেকটা অসহায় অবস্থায় পড়েছেন। বিশেষ করে মেয়েদের, শিশুদের পোশাক ও জুতার বাজারে গিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ পাচ্ছে ক্রেতাদের।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের বাজারের পুরুষের চেয়ে নারীদের পোশাকের চাহিদাই বেশি। খুব সাধারণ মানের কোনো থ্রিপিসের মূল্য ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। আর জুতার বাজার একইভাবে চড়া। ১ হাজার টাকার নিচে সাধারণ মানের কোনো জুতা মিলছে না বাজারে।
বাগেরহাটে ঈদবাজারের পোশাক ও জুতার সিংহভাগ দখল করে আছে বিদেশি পণ্যে। নারীদের পোশাকে ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়াল ও এর চরিত্রের নামের সঙ্গে মিল রেখে নামকরণ করা কিরণমালা, কটকটির পোশাকের পাশাপাশি ফ্লোর টাচ, লেহেঙ্গা ও জর্জেটের থ্রি-পিসের চাহিদাও রয়েছে। পোশাকের পাশাপাশি জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে ছুটছেন ক্রেতারা।
শহরের চারু ফ্যাশানের বিক্রেতা অমিত বিশ্বাস বলেন, ‘অন্যান্য ঈদের সময় রোজা শুরু থেকেই কাস্টমার আসতে থাকে, বিক্রিও হয় ভালো। কিন্তু এবার রোজার শুরুর দিকে কাস্টমার ছিলনা।’
তার মাতে, এবার মৌসুমের শুরুতে চিংড়ির মড়ক এবং সাম্প্রতি শেষ হওয়া বাগেরহাট বাণিজ্য মেলায় প্রলভনের লটারির প্রভাব পড়েছে ঈদের বাজারে। চিংড়িতে মড়ক ও দাম ভালো না পাওয়া এবং লটারির কারণে মানুষের হাতে টাকা কম। তাই বিক্রি অন্য বছর গুলোর চেয়ে কম।
‘চাহিদার কারণে এবার জর্জেটের পোশাকের কালেকশনই বেশি’ বলেন অমিত বিশ্বাস।
দুই মেয়েকে নিয়ে ঈদের পোশাক কিনতে আসা শারমিন সুলতানা বলেন, গত বছরগুলোর চেয়ে এবার সব ধরনের পোশাকের দামই বেশি। ভালো ডিজাইন হলেও অনেক ক্ষেত্রে কাপড়ের মান ভালো নয়। পোশাকের মতো জুতাসহ অন্যান্য জিনিসেরও দাম বেশি।
শহরের কাপুড়ের পট্টির রাবেয়া গার্মেন্টসের রিফাত রাসুল বলেন, ‘বাজারে বেশির ভাগ পছন্দের পোশাকই ভারতীয়। তবে বেচাবিক্রি কম হওয়ায় আমরা হতাশ। ক্রেতাদের বেশির ভাগ এখন আসছেন দরদাম ঘুরে দেখতে। কিনছেন খুব কম।’
স্ত্রীকে নিয়ে বাজারে আসা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সব জিনিসের দাম এবার আকাশছোঁয়া। শুধু পোশাক নয়, চাল থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনিয় সকল জিনিসের দামও বেশি। আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের ঈদ উৎযাপন তাই কষ্ট সাধ্য।’
এইচ//এসআই/বিআই/১৭ জুন, ২০১৭