স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
ঘূর্ণিঝড় মোরা ধেয়ে আসতে থাকায় ‘মহাবিপদ সংকেত’ জারির পর থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে প্রশাসন।
সোমবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় মংলা সমুদ্র বন্দরে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি সভা করে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন। প্রস্তুতি হিসেবে বাগেরহাটে খোলা হয়েছে ১০টি কন্ট্রল রুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৩টি মেডিকেল টিম।
ছুটি বাতিল করা হয়েছে জেলার সকল পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মংলা বন্দরে অবস্থান করা ১১টি বানিজ্যিক জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রেখেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, বিপদ সতর্ক সংকেত থাকায় বন্দরে অবস্থান করা সব জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নৌবাহিনীর ১০টি এবং কোস্টগার্ডের ২টি জাহাজ মংলায় সরিয়ে আনা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার দুপুরের পর থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে বাগেরহাটে। জেলা ও উপকুলীয় উপজেলাগুলোতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেলার ২৩৪টি সাইক্লোন সেল্টার, শুকনো খাবার।
‘শরণখোলা এবং মোংলা উপজেলার ১৫ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে শরণখোলার ৮২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৩ হাজার এবং মোংলার ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।’
ঝড়টি মঙ্গলবার (৩০ মে) সকালে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।
ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোরা মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৫টার দিকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। ওই এলাকায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
মংলা বন্দর ছাড়াও ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৮ নম্বর মহা বিপদ সংকেতের আওতায় রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে অতি সত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নৌযানগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ঘুর্ণিঝড় মোরা মোকাবেলায় বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৫ শতাধিক মাছ ধরার ফিশিং ট্রলার দুবলা, হিরনপয়েন্ট, কটকা, কচিখালীসহ বিভিন্ন এলাকার ছোট ছোট নদী ও খালে আশ্রয় নিয়েছে। সুন্দরবন বিভাগের সকল নৌযানগুলোও নিরাপদে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে।
এইচ//এসআই/বিআই/৩০ মে, ২০১৭
| মংলায় ৮, চট্টগ্রামে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত