অলীপ ঘটক, চিফ নিউজ এডিটর | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে টানা বৃষ্টির কারণে তলিয়ে গেছে অধিকাংশ মাঠের পাকা বোরো ধান। অসময়ে বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত মাঠে এরই মধ্যে পচন শুরু হয়েছে ধান ও ধানগাছে।
এ অবস্থায় ফসল তুলতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুয়ায়ী, চলতি বছর জেলায় নয় উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ৫১ হাজার হেক্টর জমিতে। তবে চাষ হয়েছে ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে, শতকরা ৩৭ ভাগ জমির ধান পুরোপুরি পেকেছে। যার মাত্র ১৬ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকি ধান এখনও মাঠেই রয়েছে।
বৃষ্টিতে বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া, কান্দাপাড়া, বেশরগাঁতি, চরগ্রাম, বেমরতা, ফতেপুর, ডেমা, চুলকাঠি, শ্রীঘাট, সিএন্ডবি বাজার, ষাটগম্বুজসহ বিভিন্ন উপজেলার পাকা বোরো ধানের মাঠ তলিয়ে গেছে। তবে বৃষ্টির কারণে জেলায় কি পরিমান জমির রোরো ধান নষ্ট হয়েছে তার কোন হিসাব জানাতে পারেনি কৃষি বিভাগ।
সদর উপজেলার চরগ্রামের কৃষক শেখ আসাদুজ্জামান রিপন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, এ বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করি। ফলনও ভালো হয়েছিল। এক সপ্তাহ হলো শ্রমিক নিয়ে মাঠ থেকে পাকা ধান কাটা শুরু করি। কিন্তু হঠাৎ শুরু হওয়া আগাম বৃষ্টিতে কেটে রাখা ধান আর মাঠ থেকে ঘরে তুলে পারিনি।
‘বৃষ্টির পানিতে সব তলিয়ে গেছে। এখন মাঠে পড়েই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান।’
কৃষক সাধন পাল ও নিরাপদ পাল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, এবার গত বছরের চেয়ে বোরোর আবাদ ভাল হয়েছিল। বৈশাখের শুরু থেকে ধান কাটতে শুরু করি আমরা। কিন্তু হাঠাৎ করে শুরু হওয়া ঝড়-বৃষ্টিতে পাকা ধান সব মাটিতে পড়ে গেছে।
মাঠ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গাছ থেকে ঝরে পড়ছে ধান। অনেক ক্ষেতে পানির কারনে পচতে শুরু করেছে ধান। এই অবস্থায় এ বছর অধিকাংশ মাঠের ধান আর ঘরে তোলা সম্ভব না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাগেরহাট অফিসের উপ-পরিচালক মো. আবতাব উদ্দিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, অতি বৃষ্টিতে বাগেরহাটের মাঠে কাটার অপেক্ষায় থাকা পাকা-আধাপাকা বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে ধানের মাঠ তলিয়ে রয়েছে। হঠাৎ বৈরি আবহাওয়ার কারনে কৃষক মাঠ থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারায় মাঠেই ঝরে পড়ছে। এতে বড় ধরণের ক্ষতি আশঙ্কা করছি।
তবে বৃষ্টির কারণে জেলার কত হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তার কোন হিসাব দিতে পারেন নি তিনি। ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তা হাতে পেলে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ জানা যাবে।
এজি//এসআই/বিআই/২৪ এপ্রিল, ২০১৭
** বাগেরহাটে চিংড়ি ঘেরে মড়ক, চাষিরা দিশেহারা