স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
পাখির হাড় দিয়ে সর্বরোগের চিকিৎসা করে আসছিলেন বাগেরহাটের দুই সহোদর। নিজেদের কবিরাজ দাবি করলেও পাখির হাড় দিয়ে চিকিৎসা পদ্ধতির কারণে স্থানীয় ভাবে তারা পরিচিত ‘পাখি বাবা’ নামে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে ‘পাখি বাবা’র আস্তানা। তাদের আসল নাম মো. মাকসুদুর রহমান পাইক ও মাহমুদ হাসান পাইক। চিকিৎসার নামে কুসংস্কারকে পুঁজি করে ভালোই চলছিল তাঁদের দিন।
তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে হাতেনাতে ধরা খেয়ে এক মাস করে কারাদণ্ড আর এক লাখ করে দু’জনে মোট দুই লাখ টাকা জরিমানা পেয়েছেন তারা। আর জরিমানা প্রদানে ব্যার্থ হলে আরও ১৫ দিন করে কারাদণ্ড।
শনিবার (৮ এপ্রিল) দিনগত রাতে হাড় ভাঙা রোগী হিসাবে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাতেনাতে তাদের আটক করে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দিন।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নাজিম উদ্দিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, দুই ভাই মাকসুদ ও মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে ‘পাখি বাবা’ সেজে রোগমুক্তির কথা বলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছিলেন। পাখির যে হাড় দিয়ে তাঁরা চিকিৎসা করতেন, সেটি ৪০০ বছরের পুরোনো বলে তাদের দাবি। তেলে ডুবিয়ে রাখা হয় সেই হাড়। ওই হাড় আর তেল শরীরে লাগালেই হাড় ভাঙাসহ যে কোন রোগী ভালো হয়ে যায়—এসব বলে প্রতারণা করে আসছিলেন তারা।
নাজিম উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়ে শনিবার রাতে হাড় ভাঙা রোগী সেজে তিনি নিজে চিকিৎসা নিতে যান ‘পাখিবাবার’ আস্তানায়। রোগী পেয়ে মাকসুদ তাঁর কাছে এক্স-রে ও এমআরআই দেখতে চান। এসব নেই জানিয়ে তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘এসব দিয়ে কী করবেন? আপনি কি লেখাপড়া জানেন?’
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ‘পাখিবাবা’ মাকসুদ তাঁর ওপর বিশ্বাস আনতে বলেন। না হলে ‘হাওয়া’ করে দেওয়ার হুমকি দেন।
এরপর পুলিশের সহায়তায় দুই ভাইকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতারণার দায়ে দুই ভাইকে এক মাস করে কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে মোট দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন।
স্থানীয়রা জানায়, তাদের পিতা প্রয়াত নেছার উদ্দিন পাইকও ওই হাড় দিয়ে একই ভাবে প্রতারণা করে আসছিল। প্রতারণায় ব্যবহৃত হাড়টি ময়লার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এইচ//এসআই/বিআই/৯ এপ্রিল, ২০১৭