স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের পানগুছি নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজদের সন্ধানে চলা উদ্ধার অভিযান ৯৭ ঘন্টা পর সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখনও নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ২ শিশু।
শনিবার (১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাটে প্রেস ব্রিফিং-এ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওবায়দুর রহমান অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
গত মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকালে প্রায় ৮০ জন যাত্রী নিয়ে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পানগুছি নদীতে ইঞ্জিনচালিত একটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর অধিকাংশ জীবিত উদ্ধার হলেও নিখোঁজ হন অন্তত ১৯ জন। তাদের উদ্ধারে নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের উদ্ধার কর্মীরা গেল চারদিন ধরে পানগুছি নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়।
নিখোঁজদের উদ্ধারে চলা অভিযানে এখন পর্যন্ত ১০ নারী, ৫ পুরুষ ও দুই শিশুসহ ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে দুই শিশু।
এরা হলেন- মোরেলগঞ্জ উপজেলার উত্তর সুতালড়ি গ্রামের মো. মহসীনের ৬ বছর বয়সী ছেলে হাসিব এবং একই উপজেলা পল্লীমঙ্গল বাজার এলাকার মো. বাচ্চু বাদশার ১০ মাস বয়সী ছেলে রাহাত বাদশা।
প্রেস ব্রিফিং-এ ইউএনও মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, পানগুছি নদীতে ট্রলার ডুবির পর নিখোঁজদের উদ্ধারে সরকারের তিন বাহিনী গত পাঁচদিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এছাড়াও স্থানীয়রাও এই কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ যে দুই শিশুকে এখনো পাওয়া যায়নি তাদের উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করবে।
অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ এবং ঘাট মালিকদের অব্যবস্থাপনার কারনে ট্রলার ডুবির এ ঘটনা ঘটেছে বলে ব্রিফিংএ মন্তব্য করেন তিনি।
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া নৌবাহিনীর কমান্ডার শাহরিয়ার আকন বলেন, নিখোঁজদের উদ্ধারে আমরা সর্বাত্তক ভাবে কাজ করেছি। উদ্ধারে নির্ধারিত সময় পার হওয়ায় অভিযান সমাপ্তি টানা হয়েছে। যে শিশু দুটি নিখোঁজ রয়েছে তাদের এখন পাওয়ার সম্ভবনা খুবই কম।
ট্রলার ডুবিতে যারা নিখোঁজ ছিলেন প্রশাসন তাদের তালিকা তৈরি করে। সেই তালিকা অনুয়ায়ী অধিকাংশদের আমরা উদ্ধার করেছি। এ অভিযানকে আমরা একটি সফল অভিযান বলতে পারি।
প্রেস ব্রিফিং-এ অন্যান্যের মধ্যে ফায়ারা সার্ভিসের বাগেরহাট কার্যালয়ের উপ-সহকারি পরিচালক মাসুদুর রহমান সরদার, কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম, মোরেলগঞ্জ থানার ওসি রাশেদুল আলমসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিং শেষে দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনের পদক্ষেপ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও ওবায়দুর রহমান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, আমরা ট্রলার ঘাটের ট্রলার চালক, ইজারাদা ও ফেরি ঘাটের ইজারাদারদের আজ সতর্ক করেছি। তাদের অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহন পারাপার না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রলারের আকৃতি অনুয়ায়ী সর্বচ্চ ৩০ জনের বেশি যাত্রী না নিতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে বিষয়টি মনিটরিং করা হবে বলেও জানান তিনি।
তবে দুর্ঘটনার পাঁচ দিনেও এ ঘটনায় ঘাটের ইজারাদার ও ট্রলার চালকের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি।
এজি/এইচ/এসআই/বিআই/০১ এপ্রিল, ২০১৭
** ট্রলারডুবি: পানগুছিতে আরও ৩ নারীর মরদেহ
** ট্রলারডুবি: আরও ৯ মরদেহ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ ৬
** ট্রলারডুবি: আরও ৭ লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ১০
** বাগেরহাটে ট্রলারডুবি: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫
** ট্রলারডুবি: মা-মেয়েসহ ৪ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১৮