স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, দায়িত্বহীনতা ও বৈধ কাগজ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পরিচালনার দায়ে একটি ক্লিনিককে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বাগেরহাটের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দিন এ জরিমানা করেন।
একই সাথে ‘লাকি ক্লিনিক’ নামে ওই অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ও মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক।
একই দিনে মোল্লাহাট উপজেলার জয়ডিহি পুরাতন ঘোষগাঁতি গ্রামে একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য দেওয়া বিপুল পরিমাণের সরকারি (বাজারে বিক্রী নিষিদ্ধ) ওষুধ উদ্ধার করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে মোল্লাহাট উপজেলার সদরের ‘লাকি ক্লিনিকে’ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ক্লিনিকের মালিক মো. তৈয়েবুর রহমান ক্লনিক পরিচালনার কোন বৈধ কাগজ বা অনুমতি দেখাতে পারেননি। সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকও পাওয়া যায়নি।
অভিযানে গেলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন ওই ক্লিনিকে কোন অভিজ্ঞ ডাক্তার নেই। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এম্বুলেন্স চালক হিসেবে অবসরের পর তৈয়েবুর রহমান নামে ওই ব্যাক্তি এই ক্লিনিক খুলে বসেন। চিকিৎসক না হয়েও তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে শুরু করে অপারেশন পর্যন্ত করতেন তার লাকি ক্নিনিকে।
নাজিম উদ্দিন জানান, ‘ওই ক্লিনিকে প্যাথলজি পরীক্ষা করে স্বাক্ষর বিহীন রিপোর্ট প্রদানেরও প্রমাণ পায় ভ্রাম্যমান আদালত।’
পরে ক্লিনিক মালিক তৈয়েবুর রহমানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৫১ ও ৫৩ ধারায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ক্লিনিকে বেশ কিছু রোগী ভর্তি থাকায় মানবিক কারণে তাৎক্ষনিকভাবে ক্লিনিক সিলগালা করা হয়নি। তবে ঐ অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ও মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে উপজেলার পুরাতন ঘোষগাঁতি গ্রাম থেকে উদ্ধার করা বিভিন্ন সরকারী বিক্রী নিষিদ্ধ ওষুধের মধ্যে রয়েছে প্রায় তিন হাজার এমক্সিসিলিন ক্যাপসুল, মেট্রোনিডাজল ও প্যারাসিটামল ট্যাবলেট এবং এক হাজারের বেশী ইসোনিক্স ২০ ইনজেকশন। অভিযানকারীরা সেখানে পৌছানোর আগেই বাড়ি মালিক টুটুল মোল্লা পালিয়ে যান।
অবৈধ ক্লিনিক পরিচালনা ও সরকারী ওষুধ উদ্ধার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুণ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘যতদূর জানি “লাকি ক্লিনিক” অনুমতি নিয়েই তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিলো। তবে তাদের বর্তমান সেবার মান, লোকবল এবং কাগজপত্রের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ না নিয়ে বলতে পারছি না।’
‘সরকারী ওষুধ উদ্ধারের ঘটনাটি নি:সন্দেহে উদ্বেগজনক। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।’
এএইচ/এসআই/বিআই/০৭ ডিসেম্বর, ২০১৬