স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে বাগেরহাটে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তপন কুমার শীল (৫২) নামের ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার সকালে নিহতের সৎ শ্যালক বাসুদেব সরকারকে (৫৫) আটক করেছে পুলিশ।
নিহত তপন পরিবার নিয়ে বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকায় শ্বশুর পাঁচকড়ি সরকারের বাড়িতে থাকতেন। পেশায় নরসুন্দর (নাপিত) তপন বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডের সামনে একটি সেলুন চালাতেন।
তপনের স্ত্রী আঁখি রাণী শীল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কয়েকজন যুবক সেলুন এসে আমার স্বামীকে ডেকে বাসস্টান্ড সংলগ্ন পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে লাঠি দিয়ে পেটায়।
“পরে তারা তার মুখে জোর করে বিষ ঢেলে দিয়ে ওই ঘরে ফেলে রেখে চলে যায়।”
আঁখি আরও বলেন, আমার স্বামী (তপন) নিজের মোবাইল থেকে ফোন করে বলে আমি অমরের ঘরে পড়ে আছি। আমাকে বাঁচাও বাঁচাও.. বলে ফোন কেটে দেয়। পরে আমরা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মুসফিকার শামস মেনন বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তপন শীলকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়।
“তার মাথা ও হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে শারীরিক আঘাত, না বিষের কারণে মৃত্যু হয়েছে- তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব হচ্ছে না।”
আঁখি রাণী শীল জানান, তার বাবা পাঁচকড়ি সরকার নিজের সম্পত্তির একটি অংশ সৎ ছেলে বাসুদেব সরকার এবং বাকি অংশ মেয়েদের নামে লিখে দিয়ে যান।
“সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে অন্য বোনদের সঙ্গে আমাদের সমস্যা চলছে। প্রায় দুই মাস আগে আমার বোনের স্বামী হৃদয় শীলের লোকজন তপনের ওপর হামলাও করে। ওই ঘটনা নিয়ে থানায় মামলা আছে।”
আঁখির অভিযোগ, তার বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতেই ‘পরিকল্পিতভাবে’ তপনকে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে হৃদয় শীলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, “সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা এ কাজ করেছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিহতের শরীরে আঘাতেরও চিহ্ন পাওয়া গেছে।
শুক্রবার সকালে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে নিহতের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আটক বাসুদেব সরকারকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলাও দায়ের করা হয়নি।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর শহরের সুপারী পট্টি এলাকার অন্ধকারাছন্ন একটি গোলি থেকে ঘরের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত মামুন পালোয়ান (৩২) শহরের রেলস্টেশন এলাকার ধলু পালোয়ানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, মামুন মাদক সেবনকারী ছিল। তাকে হত্যার পর মরদেহ রাস্তার পাশের একটি ঘরের জানালার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হতে পারে।
তবে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ধারণ করতে মামুন আত্মহত্যা করেছে।
ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না হত্যা না আত্মহত্যা।
এজি/এসআই/বিআই/২৫ নভেম্বর, ২০১৬