স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে শনিবার (১২ নভেম্বর) শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন উপকূলজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।
প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে সুন্দরবনের আলোরকোলে সমুদ্র তীরে এ রাস উৎসবের আয়োজন করা হয়। ১৪ নভেম্বর সকালে পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ উৎসব।
নিরাপদে নির্বিঘ্নে রাস উৎসবে যোগদানের জন্য সুন্দরবন বিভাগ পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের জন্য আটটি নির্দিষ্ট প্রবেশ দ্বার নির্ধারণ করেছে।
অনুমোদিত আটটি রুটগুলো হলো- বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলারচর। কদমতলা থেকে ইছামতি নদী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া-কাগাদোবেকী হয়ে দুবলার চর। কৈখালী স্টেশন হয়ে মাদার গাং, খোপড়াখালী ভাড়ানী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া-কাগাদোবেকী হয়ে দুবলার চর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা-শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী/চাঁদপাই স্টেশন হয়ে পশুর নদী দিয়ে দুবলারচর, বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর। শরণখোলা স্টেশন-সুপতি স্টেশন-কচিখালী- শেলার চর হয়ে দুবলার চর।
এসব রুটে বন বিভাগ, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও র্যাবের টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।
এদিকে, রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীর ছদ্মবেশে হরিণ শিকার বন্ধে নিরাপত্তা জোরদার করছে বন বিভাগ। উৎসব চলাকালে এ বছর সুন্দরবনে অভ্যন্তরে মাছ ধরাসহ অন্যান্য সব পাশ-পারমিট বন্ধ থাকছে।
সুন্দরবনের অভ্যান্তরে রাশ উৎসব নির্ভিঘ্নে শেষ করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের জন্য বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের ১২ থেকে ১৪ নভেম্বর- এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পথে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটিমাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন।
বন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না। প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রং দিয়ে বিএলসি/সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ হতে প্রাপ্ত সনদপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, মাইক বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যে কোনো অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র বহন থেকে যাত্রীদের বিরত থাকতে হবে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে রাস উৎসবকে সফল ভাবে শেষ করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বন বিভাগ ও পুলিশের সমন্বয়ে চারটি টহল দল রাশ মেলা শুরু প্রথম দিন শনিবার থেকে পশুর, শ্যালা, ভোলা ও শিবসা নদ-নদীতে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে। দুবলার চরে মেলার তিন দিন বন বিভাগের আরও তিনটি টহল দল সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার কাজ করবে।
মেলা উদ্যাপন কমিটির চেয়ারম্যান ও দুবলা ফিসারমেন গ্রুপের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) জিয়া উদ্দিন বলেন, রাশ উৎসবের সময় দুবলার চলের আলোরকোলে ক্ষুদ্র ও কুটি শিল্প মেলার আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া মেলায় থাকছে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এইচ/এসআই/বিআই/১১ নভেম্বর, ২০১৬
** সুন্দরবনের দুবলার চরে রাস মেলা