সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকার না করার অঙ্গীকার করেছেন উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের চার শতাধিক জেলে।
বুধবার (১২ অক্টোবর) সকালে মংলা বন্দরের পশুর নদীর মোহনায় মৎস্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানে জেলেরা এই অঙ্গীকার করেন।
মংলা উপজেলার চিলা, জয়মনি, দত্তেরমেঠ, উলুবুনিয়া, মাদুরপাল্টা, সুন্দরবনসহ বিভিন্ন গ্রামের চার শতাধিক জেলেদের নিয়ে সচেতনতামূলক ব্যতিক্রমী এ প্রচারাভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে প্রশাসন।
প্রচারাভিযানে সভাপতিত্ব করেন মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু সুফিয়ান।
ইলিশ রক্ষায় দেশের ২৭ জেলার নদ-নদী ও উপকূলে মাছ ধরার ওপর বুধবার থেকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ না শিকার করার অঙ্গীকার করা মংলা উপজেলার দত্তেরমেঠ গ্রামের জেলে আব্দুর রশিদ বলেন, সাগরে ইলিশ ধরে আমার সংসার চলে। বাপ-দাদার হাত ধরে আমাদের এ পেমায় আসা। ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকার প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে।
সরকারের এ উদ্যোগ আমাদের পেশার মানুষের জন্য মঙ্গল। আমাদের এলাকার জেলেরা এই ২২ দিন সাগরে যাবো না বলে প্রতিজ্ঞা করেছি।
মংলা উপজেলা জেলে সমবায় সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ কুমার মণ্ডল বলেন, উপজেলায় কয়েক হাজার মানুষ সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন ইলিশের প্রজননের সময়। জেলেরাও বুঝছে এই সময়ে মাছ শিকার বন্ধ রাখলে ইলিশের উৎপাদন বহুগুণে বেড়ে যাবে।
তাই আমরা আমাদের সমিতির মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে আমাদের এলাকার জেলেদের সাগরে না যেতে উদ্বুদ্ধ করছি।
মংলা উপজেলা জেলে সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ বৈরাগী বলেন, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তবে শুধু আমরা বন্ধ করলেই হবে না। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের জেলেরা আমাদের জলসীমায় ঢুকে অবাধে ইলিশ শিকার করে। তাদের ঠেকাতে নজরদারি বাড়াতে হবে।
সারা বছরই ভারতের জেলেরা বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সীমানায় মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। নিষেধাজ্ঞার সময়ে তাদের মাছ ধরা বন্ধে কঠর পদক্ষেপ না নিলে সরকারের ইলিশ রক্ষার এই উদ্যোগ পুরোপুরি সফল হবে না বলেন অভিমত ওই জেলে নেতার।
ইলিশ রক্ষা ও উৎপাদন বাড়াতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় এই অঞ্চলের জেলেদের সাধুবাদ জানিয়েছেন মৎস্য বিভাগের খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক রণজিৎ কুমার পাল।
অনুষ্ঠানে আসা খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, জেলেদের এ ধরনের উদ্যোগ অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত। আমরা যদি সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে জেলেদের মত সচেতন হই তাহলে আমাদের উন্নতি অবধারিত।
মংলাস্থ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মেহেদী মাসুদ বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন কোনো জেলেকে সাগরে পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত জলসীমায় নৌবাহিনীর নিয়মিত টহল রয়েছে। আমাদের জলসীমায় ভারতীয় জেলেরা প্রবেশ করলে নৌবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
এজি/এসআই/বিআই/১২ অক্টোবর, ২০১৬