স্পেশাল ও স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটে সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক শাখা ব্যবস্থাপকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা নগরীর নূর নগর এলাকা থেকে শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবর রহমানকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) তাকে খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে দুদক জানিয়েছে।
শেখ মুজিবর রহমান বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের চাকশ্রী গ্রামের প্রয়াত শেখ হাসান আলীর ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের (বাগেরহাট-খুলনা-সাতক্ষীরা) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) আবুল হাশেম কাজী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ২০১২ সাল থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত বাগেরহাট শহরের রেল রোডের সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক থাকা অবস্থায় শেখ মুজিবর রহমান, একই শাখার জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমান বাবু ও আরেক কর্মকর্তাসহ অন্তত ১২ জন ব্যাংক গ্রাহক পরস্পর যোগসাজসে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করে।
“তারা সোনালী ব্যাংকের ১৫০ জন গ্রাহকের এসওডির (সিকিউর ওভার ড্রাফট) বিপরীতে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তাদের হিসাব থেকে চার কোটি ৪৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।”
২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংকের খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট নিরীক্ষাকালে সোনালী ব্যাংক বাগেরহাট প্রধান শাখার ওই অর্থ আত্মসাতের তথ্য ফাঁস হয়।
আবুল হাশেম কাজী বলেন, ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের ওই শাখায় নতুন যোগদান করা ব্যবস্থাপক খান বাবলুর রহমান বাদী হয়ে শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমানের নাম উল্লেখ করে বাগেরহাট মডেল থানায় অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করেন।
“ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর আমি ওই মামলার তদন্ত শুরু করি। দুদকের প্রাথমিক তদন্তে টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। এই আত্মসাতে ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা ও ১২ জন গ্রাহকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।”
এদের সবার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অভিযোগের প্রমাণ মেলায় দুর্নীতি দমন কমিশনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হলে বৃহস্পতিবার কমিশন তাদের গ্রেপ্তারের আদেশ দেয়। আদেশ পেয়ে শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান হাশেম কাজী।
তিন ব্যাংক কর্মকর্তার মধ্যে ব্যবস্থাপক শেখ মুজিবর রহমান ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শেখ মাহফিজুর রহমান বাবুকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। তবে অন্যজন এখনও চাকরিতে বহাল রয়েছেন।
খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুকুমার বিশ্বাস জানান, মুজিবর রহমানকে সকালে সোনাডাঙ্গা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংকের খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট নিরীক্ষাকালে সোনালী ব্যাংক বাগেরহাট প্রধান শাখার ওই অর্থ আত্মসাতের তথ্য ফাঁস হয়। এরপর ঘটনা তদন্তে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি কমিটি গঠন করে।
এজি/এসআই/বিআই/১২ আগস্ট, ২০১৬
** সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতঃ সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
** বাগেরহাটে সোনালী ব্যাংকের কোটি টাকা লোপাট